নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের খ্যাতিমান প্রকৌশলী জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী আর নেই। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গত সোমবার রাতে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নিকটাত্মীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত ইসলাম জানান, গত সোমবার রাত ২টার দিকে ঘুমের মধ্যে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’ হয়। ভোর ৪টার দিকে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে যখন নিয়ে গেলাম, ততক্ষণে তিনি মারা গেছেন। জামিলুর রেজা চৌধুরীর জামাতা অধ্যাপক জিয়া ওয়াদুদও গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ফেসবুকে তার মৃত্যুর খবরটি জানিয়েছেন। বাদ যোহর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর দাফনের কথা জানান ভাগনে রিফাত। অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। ২০১৮ সালের ১৯ জুন সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়। বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে যেসব বড় বড় ভৌত অবকাঠামো হয়েছে, তার প্রায় সবগুলোতেই কোনো না কোনোভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৯৩ সালে যাদের হাত দিয়ে বাংলাদেশের ইমারত বিধি তৈরি হয়েছিল জামিলুর রেজা চৌধুরী তাদের একজন। দেশের প্রথম মেগা প্রকল্প বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণে ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। আর এখন পদ্মার ওপরে দেশের সবচেয়ে বড় যে সেতু তৈরি হচ্ছে সেই প্রকল্পের আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্যানেলেরও নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তিনি। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ চলমান নানা উন্নয়ন প্রকল্পেও বিশেষজ্ঞ প্যানেলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক।
রাষ্টপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক: অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন স্বনামধন্য প্রকৌশলী হিসেবে তিনি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা বহুমুখী সেতু, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ চলমান নানা উন্নয়ন প্রকল্পে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের নেতৃত্বদানকারী এই গুণী ব্যক্তিত্বের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। অপরদিকে গতকাল মঙ্গলবার এক শোকবার্তায় মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি।