নিজস্ব প্রতিবেদক
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক অর্থনীতির অস্থিরতার মধ্যে এ বছর বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর। রবিবার অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘নিউ চ্যালেঞ্জ ইন দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে সর্বশেষ জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে টেনে এনে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে আছে। তবে এ বছরের মধ্যে তা ১০ শতাংশ হবে। এটা যেন ১০ শতাংশের বেশি না হয় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। ১০ থেকে ১২ শতাংশ হলে আমাদের সবার ওপরে অনেক চাপ পড়বে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে, এটা যেন এক বছর স্থায়ী হয়। এর মধ্যেই মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে। এর বেশি স্থায়ী হলে সবার কষ্ট হবে। মুল্যস্ফীতি অবশ্যই কমাতে হবে। মূল্যস্ফীতি কমিয়ে মানুষকে স্বস্তি দিতে হবে। তা না হলে সামনে আরও দুঃখ আসছে।’
মনসুর বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভ প্রায় ৫০ বিলিয়ন ছিল। সেখান থেকে নেমে এসেছে ৩২ বিলিয়নে। এখানে গ্যাপ প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলারের। এক দুই বিলিয়ন ডলারের হলে ম্যানেজ করা যেত। কিন্তু গ্যাপটা বেশি বড়। এমন অবস্থায় আমাদের ব্যবস্থাপনায় আরো বিচক্ষণতার প্রয়োজন। সরকারকে আরো নিয়ন্ত্রিতভাবে সব সামলাতে হবে। সময় মত অ্যাকশন নিতে হবে।’
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সামনে চালের উপরেও প্রভাব পড়বে। ধানের উৎপাদন ভালো হবে না। মার্কেটকে দোষারোপ করে লাভ হবে না। দরকার হয় আমদানি বাড়াতে হবে। এটা নিয়ে আমাদের এখনই ভাবতে হবে। সাপ্লাই সাইড আরও ভালো করতে হবে।’
রাজস্ব আয় প্রসঙ্গে ড. মনসুর বলেন, ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় আরও জোর দিতে হবে। বিদ্যমান যে ব্যবস্থা আছে তা দিয়ে হবে না। বরং ব্যবসায়ীদের আরও হয়রানি বাড়বে।’
মনসুর বলেন, ‘আমাদের ভিন্ন ভিন্ন এক্সচেঞ্জ রেট। প্রায় চারটা এক্সচেঞ্জ রেট রয়েছে। ডলারের দর ভিন্নতা অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে। এক্সচেঞ্জ রেট ভিন্ন হলে তার ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে। তাই এ বিষয়েও বাংলাদেশ ব্যাংককে কাজ করতে হবে। সব জায়গায় একটা নির্দিষ্ট রেট করে দিতে হবে।’
ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনায় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বাংলাদেশের নিট পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সাবেক প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক প্রেসিডেন্ট আবুল কাসেম খান, ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী প্রমুখ।