নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এড. মৃণাল কান্তি দাস বলেন, কমিউনিটি পুলিশ হলো সমাজমুখী পুলিশী কার্যক্রম। জনগণের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অপরাধ দমন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সামাজিক সমস্যাদি যা থেকে অপরাধ সৃষ্টি হয় তা সমাধানের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা। কমিউনিটি পুলিশিং হচ্ছে জনগণের সঙ্গে পুলিশের আস্থার এক সেতুবন্ধন। পুলিশ ও জনগণের মধ্যের পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অপরাধ দমন ও এলাকার সমস্যা সমাধানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। জঙ্গিবাদ ও মাদক থেকে সমাজকে সচেতন ও মুক্ত রাখার জন্য কমিউনিটি পুলিশিং এর অবদান হতে হবে সবচেয়ে বেশি। কমিউনিটি পুলিশিং একটি সংগঠনভিত্তিক দর্শন ও ব্যবস্থাপনা যা জনগণকে সম্পৃক্ত করে জনগণ, সরকার ও পুলিশের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অপরাধ দমন ও সমস্যার সমাধানকল্পে অপরাধের কারণ দূরীকরণ, অপরাধ ভীতি হ্রাস ও সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেয়’।
কমিউনিটি পুলিশিং এখনও একটি উদীয়মান ও ক্রমবিকাশশীল পুলিশিং দর্শন। এটা হচ্ছে সে প্রশাসনিক নীতি ও কৌশল যা পুলিশকে আগাম কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক অপরাধের উৎসমূলের পরিবর্তন ঘটিয়ে কার্যকরভাবে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, জনগণের অপরাধভীতি কমানো, জীবনযাত্রার গুণগত পরিবর্তন এবং উন্নতমানের পুলিশী সেবা নিশ্চিত করে। এ ব্যাপারে কমিউনিটি পুলিশিং এর দায়িত্ব হবে, যেকোনও ধরনের মাদক, জঙ্গিবাদ ও সমাজে অপরাধের মূল হোতাদের সম্পর্কে পুলিশকে অবহিত করা। বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে।
জনগণের আইনী সুবিধা গ্রহণের সুযোগকে আরও গণমুখী করতেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা ও সম্পর্ক বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা থেকেই কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যক্রম হতে পারে একটি সফল পদক্ষেপ। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক হতে হবে। অপরাধ দমনে পারস্পরিক সহযোগিতার মানসিকতা থাকতে হবে এবং ব্যক্তিস্বার্থকে পরিত্যাগ করে দেশ সেবায় আত্মনিবেদন করতে হবে। কমিউনিটি পুলিশিংকে সফল করতে হলে পুলিশ বাহিনীর সদস্য এবং কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সুযোগ পাওয়া জনগণের প্রতিনিধিগণকে একজন প্রকৃত সমাজকর্মী ও দেশকর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। গতকাল শনিবার সকালে জেলা পুলিশ ও জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের আয়োজনে জেলা পুলিশ লাইন্স ড্রিল সেডে এ আলোচনা সভা হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এসব কথা বলেন। মুন্সীগঞ্জে আনন্দমুখর পরিবেশে কমিউনিটি পুলিশিং ডে অনুষ্ঠানে ‘মুজিববর্ষের মূলমন্ত্র, কমিউনিটি পুলিশিং সর্বত্র’-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আনন্দমুখর পরিবেশে মুন্সীগঞ্জে কমিউনিটি পুলিশিং ডে অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল মোমেন পিপিএম এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার। এবার জেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সদর থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মোঃ মফিজুল ইসলাম এবং শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আয়নাল হক স্বপন। নির্বাচিতদের এসময় সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন অতিথিবৃন্দ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার্স) মোঃ আদিবুল ইসলাম আদিব এর সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হাই তালুকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও প্রশাসন) মু. মাহফুজ আফজাল, পৌর মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব, লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বি.এম শোয়েব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোঃ নাজমুর রায়হান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভুইয়া, কমিউনিটি পুলিশিং এর আহবায়ক প্রফেসার প্রবীর কুমার গাঙ্গুলী, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি মোঃ মহাসিন মাখন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কাদের মোল্লা, সাবেক বারের সভাপতি এড. আর্শেদ উদ্দিন চৌধুরী, এড. অজয় চক্রবতী, কোর্ট পিপি এড. আব্দুল মতিন, ডিবি ওসি মো. মোজাম্মেল হক, সদর থানার ওসি মোঃ আনিচুর রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি মতিউল ইসলাম হিরু, বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম দেলোয়ার হোসেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অভিজিৎ দাস ববি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এডভোকেট গোলাম মাওলা তপন, ক্রীড়া সংগঠক আয়নাল হক স্বপন, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সদস্য গাজী আশরাফ লিটনসহ জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা এসময় সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সদস্যদের তথ্য দিয়ে থানা পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।