নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনি গ্রামে দুই সন্তানের জননী নাছরিন (২৭) কে পরকীয়ার জের ধরে ঘাতক স্বামী হেদায়েত হোসেনসহ তার স্বজনদের বিরুদ্ধে হত্যা করার অভিযোগ করেন গজারিয়া থানায় নিহতের ভাই বাদী হোসেন মিয়া। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ঘাতক স্বামী হেদায়েত হোসনের দুই বোন শাহিনা বেগম (৪৫), সাফিয়া (৪০), ভগ্নিপতি আলমগীর (৫০) ও এক ভাগিনা সাফায়াতসহ ৪ জন থানা হেফাজতে আটক আছে। গত ২২ জুন রবিবার রাত ২টায় ষোলআনি গ্রামে মৃত লতিফ মাষ্টারের ছেলে হেদায়েত হোসেনের বাড়িতে একই গ্রামের আহসান মিয়ার ছেলে জিসানের পরকীয়ার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহতের ভাই বাদী হোসেন মিয়া জানান, পারিবারিক কোলাহলে আমার বোনকে তার স্বামী হেদায়েত হোসেন হত্যা করেছে। ঘাতক হেদায়েত হোসেন রাতে মোবাইল করে জানান, নাছরিন বিষ খেয়ে মারা গেছে। তাকে নিয়ে ভবেরচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছি। কিছু সময় পর ঘাতক হেদায়েত হোসেনকে আর মোবাইল করে পাওয়া যায়নাই। সকাল ৫টায় হাসপাতালে এসে দেখি বোনের লাশ পড়ে আছে। লোকজন নাই। স্বামী হেদায়েত হোসেনের মা মাফিয়া বেগম জানান, ছেলে হেদায়েত হোসেন বাড়িতে ছিল না। গভীর রাতে ঘুম থেকে জেগে দেখি, গ্রামের আহসান মিয়ার ছেলে জিসান আর পুত্রবধু একসাথে বসে আছে। তখন আমি চিৎকার করে বলি, আমার ঘরে চোর এসেছে, চোর এসেছে। এ কারণে জিসান আমাকে মারধর করেছে। বাড়ির মানুষ জেগে আমার ঘরে আসতে না আসতে জিসান পুত্রবধুকেও মারধর করে। সে সময়ে ছেলের স্ত্রী নাছরিন চিৎকার করে বলছে জিসান আমাকে মারধর করেছে। লোকজন এসে দেখে নাছরিন বমি করছে। তাকে বাঁচাতে বাড়ির শ্যামল ও বড় ছেলের স্ত্রী মিলে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর কি ঘটেছে আর জানানাই। স্বামী হেদায়েত হোসেন নিজে মোবাইল করার কথা স্বীকার করে বলেন, রাতে আমি ঢাকায় ছিলাম। রাত ২টায় ফোনে জানানো হয় বাড়িতে জিসান এবং স্ত্রী নাছরিন একসাথে বসে আছে। এর প্রতিবাদে জিসান এ কাজ করেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডাঃ মাহে আলম জানান, রাত ৩টায় রোগীটি হাসপাতালে পৌঁছে। রোগী নিয়ে আসা লোকজন আমাকে জানান, রাস্তায় রোগী প্রচুর বমি করছে এবং সে বিষ খেয়েছে। চিকিৎসা শুরুর আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রোগীর দুইহাতে একাধিক কাটা দাগ আছে। তদন্ত কর্মকর্তা এস আই জামাল উদ্দিন জানান, দুই হাতে ৭টা ও ৫টা কাটা দাগ আছে। নিহতের মুখে বিষপানের কোন গন্ধ নাই। তাকে হত্যা করেছে। আটককৃত ৪ জন সম্পর্কে ওসি বলবেন। ওসি মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, হত্যা মামলা হয়েছে। আটককৃত ৪ জন সম্পর্কে এজহার লিখা শেষে বলা যাবে।