নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হতে সারাদেশেই ভূমিহীন পরিবারের মাঝে জমি ও ঘর বিতরণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় গজারিয়ায় ভবেরচর ইউনিয়নেও নির্মিত হচ্ছে এই ঘর। কিন্তু এই ঘর নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। সরেজমিনে ভবেরচর ইউনিয়নের শ্রীনগর মৌজায় নির্মাণাধীন এই প্রকল্পে ঘুরে ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রকল্পে ব্যবহৃত ইটের কোন নাম্বার নেই। গাড়ি থেকে নামাতে গিয়ে অনেক ইট ভেঙ্গে গুঁড়া হয়ে গেছে। বালিও নিম্নমানের। প্রকল্পে কন্সট্রাকশন কাজের মিস্ত্রী, লেবারের ঠিকাদার আব্দুস সালাম জানান, ইট দুই নাম্বার। কিন্তু আমাদের কিছু করার নাই। অফিস থেকে যা সাপ্লাই দেয় আমরা তা দিয়েই কাজ করি। সরেজমিনে আরো দেখা যায়, কোন প্রকার গাথুনি ছাড়াই শুধু ভিটির উপর ইট বিছিয়ে নির্মিত হচ্ছে এই ঘর। পার্শ্ববর্তী বাড়ির গণেশ চন্দ্র জানান, বছর দুই আগে ঋণের টাকায় বালি ভরাট করে ঘর নির্মাণ করেছিলেন তিনি। বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য রাস্তার সাথে সরকারি জায়গাও ভরাট করতে হয়েছিল। কিন্তু পূর্ব নোটিশ ছাড়াই উনার ঘর অপসারণ করা হয়েছে। গণেশ চন্দ্রের মতো অনেককেই পূর্ব নোটিশ ছাড়া অপসারণ করা হয়েছে। এমনকি পূর্বের ভিটি পর্যন্ত নিতে দেওয়া হয়নাই। সরকারি জায়গায় ঘর নির্মাণ অবৈধ বলে এখন সেইসব ভিটিতে প্রকল্পের ঘরগুলো নির্মিত হচ্ছে। এ বিষয়ে ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সাঈদ মোহাম্মদ লিটন জানান, এই প্রকল্পের ঘর নির্মাণের সাথে ইউনিয়ন পরিষদের কোন সম্পর্ক নাই। পিআইও অফিসের তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা পিআইও তাজুল ইসলাম বলেন, গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে সরকারের বরাদ্দকৃত ১,৭১,০০০ (এক লক্ষ একাত্তর হাজার) টাকায় উক্ত ঘর নির্মাণ কিভাবে সম্ভব ? আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষেই ঘর নির্মাণ করছি। সেক্ষেত্রে ২ নাম্বার ইট ব্যবহার করছি। আর ভিটির উপর ঘর নির্মাণে কোন অসুবিধা হবে না। অথচ এ কাজে অভিজ্ঞ রোলার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কন্সট্রাকশন এর কর্ণধার রবিউল হোসেন জানান, প্রকল্পের ঘরগুলোর যে ছবি, নকশা, স্ট্রাকচার, ভৌত অবকাঠামোগত সুবিধা দেখলাম তাতে ভাল মানের সামগ্রী দিয়েই ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।