সিরাজদিখানে আবার দুই গ্রুপে সংঘর্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন
নিজস্ব প্রতিবেদক : সিরাজদিখানের লতব্দী আবারও উত্তপ্ত। গতকাল লতব্দী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের সমর্থক ও সাবেক চেয়ারম্যান হাফেজ ফজলুর সমর্থক জহির গ্রুপের সাথে সংঘর্ষ হয়। দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হয়েছে টেঁটাবিদ্ধসহ আহত হয়েছে ৫ জন। টেঁটাবিদ্ধ দিপু (১৮) কে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এছারা ফাতেমা (২৫)সহ বাকিদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেওযা হয়েছে। এ সময় পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছে। ৩ শতাধিক দেশীয় অস্ত্র (টেঁটা) উদ্ধার। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এর আগে গত সোমবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে।
এলাকাবাসী ও একাধিক সূত্রে জানা যায়, লতব্দী ইউনিয়নের (১,২,৩ ওয়ার্ড) মহিলা ইউপি সদস্য ফরিদা বেগমের স্বামীকে গত শনিবার আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সম্মেলনের দিন উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও লতব্দী ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকরা মারধর করে। এ ঘটনায় জহিরের লোকজন মারধর করেছে বলে সোহরাব হোসেনের সমর্থকরা প্রচার করে। এছারা নয়াগাঁও গরুর হাট ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে ও এ মসজিদের ৪/৫ লাখ টাকার হিসাব নিয়ে সোহরাব হোসেনের সাথে এলাকায় বিরোধের সৃষ্টি হয়।
গত সোমবার রাত ৯টার দিকে সোহরাব হোসেন ঢাকা যাওয়ার সময় নয়াঁগাও বাজারের সামনে বসে থাকতে দেখেন লতব্দী ইউনিয়নের কাঠখাগড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে শাহিনসহ ৪/৫ জনকে। শাহিনের একটি ছিনতাই মারামারির গ্রুপ রয়েছে। সোহরাব শাহিনকে বলে এবার ভাল হয়ে যাও আর যেন বিচার করতে না হয়। কিছুক্ষনের মধ্যেই জহির কয়েকটি মোটর সাইকেল নিয়ে এ্সে সোহরাব হোসেনের প্রতি উত্তেজিত হয় এবং মারধর করে। একটি বাড়িতে সোহরাব হোসেন আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়েও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। খবর পেয়ে লতব্দী গ্রামের সোহরাব হোসেনের সমর্থকরা লাঠি সোটা নিয়ে আসলে জহির গ্রুপ পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে যায়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র, টেঁটা বল্লম, দা, বটি নিয়ে প্রস্তুতি নেয়। এরপর দুপুরে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতােেয়ন হয়।
লতব্দী ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম সোহরাব হোসেন জানান, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সম্মেলনের দিন মুক্তির সাথে কয়েকজনের ঝগড়া হয়। তাছারা জহির অবৈধভাবে ইটের ভাটা করেছে। এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স ও নেয় না। আনোয়ারের ছেলে শাহিন কয়েকদিন আগে কিছু টাকা এক বাড়ি থেকে ডাকাতি করে নিয়ে যায়। বিচার করে যার টাকা তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জহির এই ছিনতাই ও কিলার গ্রুপটির নেতৃত্ব দেয়। এসব কারনে গত সোমবার রাত ৯টার দিকে আমি পরিষদ থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে জহির গ্রুপ নিয়ে আমাকে হেয় করে। এলাকার মুরুব্বীরা আমাকে একটি বাড়িতে বসতে দিলে সেখানে তারা হামলা চালায়। লতব্দির লোকজন খবর পেয়ে আসলে ওরা চলে যায়। গতকাল মঙ্গলবার ওরা অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে এলাকাবাসীর উপর হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিলে আমি থানা পুলিশকে অবহিত করি। আমাদের এলাকার সাধারণ লোকজনের প্রতি হামলা চালাতে আসে জহির বাহিনী। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সিরাজদিখান অফিসার ইনচার্জ মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষের ২ জন টেঁটাবিদ্ধসহ ৩ জন আহত হয়েছে। পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করায় সংঘর্ষ হয়নি ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছিল। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।