নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার মরদেহে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে তার মরদেহ জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পৌঁছালে মরদেহে গার্ড অব অনার জানানো হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সকাল পৌনে ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাজার নামাজ।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ডেপুটি স্পিকারের কার্যালয় থেকে জানানো তথ্য অনুযায়ী, জানাজা ও সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দুপুর ১২টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে মরদেহ নিয়ে যাত্রা করে অ্যাম্বুলেন্স। এর আগে সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ফজলে রাব্বী মিয়ার মরদেহ এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখান থেকে সকাল ৯টায় একটি লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
গত ২২ জুলাই শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে রাব্বী মিয়া। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ফয়জার রহমান এবং মাতার নাম হামিদুন নেছা। ১৯৫৮ সালে অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন। ওই বছর আইয়ুব খান পাকিস্তানে মার্শাল ল’ চালু করেছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতা চাচার সঙ্গে তিনি মার্শাল ল’ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬২-৬৩ সালে শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টের বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন করেছিলেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ফজলে রাব্বী মিয়া মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি ১১নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বৈশ্বিক জনমত গড়ে তুলতে তিনি কাজ করেছেন।
ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ফজলে রাব্বী মিয়া। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন। তবে ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দশম সংসদে তিনি ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাদশ সংসদেও একই দায়িত্ব পালন করছিলেন।