নিজস্ব প্রতিবেদক
টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকালে কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসা নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের সামনে আটকে যায়। এরপর কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ ছাড়া আর কোনো অঞ্চলের ট্রেন ছেড়ে যেতে পারেনি।
বুধবার (২০ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের গতিরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে সাধারণ যাত্রীরাও ট্রেন থেকে নেমে বিক্ষোভে সামিল হন। এতে ঢাকা থেকে সারাদেশে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি।
কমলাপুর রেল স্টেশন সূত্র জানায়, বুধবার সকাল আটটায় নীলফামারীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেসের টিকিট কিনতে কাউন্টারে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীসহ অন্য যাত্রীরা। কিন্তু কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে ৮টা ৫৫ মিনিটে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন তারা। এ কারণে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নারায়ণগঞ্জ ছাড়া দেশের অন্য কোনো অঞ্চলের উদ্দেশ্যে ট্রেন ছেড়ে যেতে পারেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেল স্টেশনের স্টেশন ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, বিমানবন্দর রেল স্টেশন দিয়ে ঢাকা থেকে সারাদেশের ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু সেখানে ট্রেন লাইন আটকে রাখায় সকাল থেকে কমলাপুর থেকে কোনো ট্রেন যেতে পারেনি। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ২৫টির বেশি ট্রেন শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে।
গত ৭ জুলাই থেকে রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে ছয়দফা দাবিতে হাতে শিকল বাঁধা অবস্থায় কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। শুরুতে একা আন্দোলন করলেও পরে তার বন্ধু, সহপাঠীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও অবস্থান নেন। ক’দিন ধরে সেখানে তারা গান, কবিতা, পথনাটকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।
রনির অভিযোগ, গত ১৩ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনের আসন নিবন্ধনের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা সংস্থা বিকাশ থেকে ভেরিফিকেশন কোড দিয়ে তার পিন কোড ছাড়াই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু ট্রেনের কোনো আসন পাননি, এমনকি কেন টাকা নেওয়া হলো, তার কোনো রশিদও দেওয়া হয়নি।
এদিকে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চ রেলস্টেশনে ঢাবি শিক্ষার্থী রনির অবস্থান নেওয়ার কারণ জানতে চেয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে এ বিষয়ে তথ্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।