নিজস্ব প্রতিবেদক
নিষেধাজ্ঞার পরেও শিমুলিয়া ঘাটে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। বিআইডব্লিউটিসির সিদ্ধান্তে দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। সেইসাথে পণ্যবাহী ট্রাক ও অ্যা¤ু^লেন্স পারাপারের জন্য রাতে নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু এমন নিষেধাজ্ঞার পরেও শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রীর উপচে পড়া ভিড় জমেছে। এ যেনো জেনেশুনে দুর্ভোগে দক্ষিণবঙ্গের ঈদ যাত্রীরা। এদিকে শিমুলিয়া ঘাটসহ জেলায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের ঢল ঠেকাতে দুই প্লাটুন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল থেকে শিমুলিয়া ঘাট ও ধলেশ^রী সেতুর টোল প্লাজার কাছে তারা দায়িত্ব পালন করছে বলে জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে হাজার হাজার মানুষ বেপরোয়াভাবে শিমুলিয়া ঘাটে এসে ফেরিতে পদ্মা পার হচ্ছেন। যা ঠেকাতে পুলিশকে সহযোগিতা করবে বিজিবি। ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল রবিবার সকাল ৯টা থেকে বিজিবি সদস্যরা শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশমুখে টহল দিয়ে ঘাটে যাত্রী ও যানবাহন প্রবেশ রোধ করে ফেরত পাঠাচ্ছেন। বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নদী পারাপারের জন্য ঘাট এলাকায় জড়ো হয় হাজার হাজার যাত্রী। ৩ নম্বর শিমুলিয়া ফেরিঘাটে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। প্রবেশপথের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো থাকলেও ৪-৫ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যাত্রীরা ঘাটে আসছে। সকাল ৮টায় শিমুলিয়ার ৩নং ফেরিঘাট থেকে একটি ফেরি ছেড়ে যেতে দেখা গেছে শিমুলিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে যাত্রী, লাশ ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে।
এদিকে দুর্ভোগে পড়া যাত্রীরা জানান, ক’দিন পরে ঈদ। ঢাকা শহর বন্ধ থাকবে। তাই গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাচ্ছি। কেউ কেউ বলছে, ঈদ করার জন্য না ঢাকাতে থাকবো বাসা ভাড়া খাবারের খরচ নাই তাই বাসায় চলে যাচ্ছি। অ্যাম্বুলেন্স যাত্রী অশোক কুমার জানান, আমার বাবা মারা গিয়েছে রাত ১টার দিকে। ঘাটে আসছি ভোরবেলায়। কিন্তু এখনও ফেরিতে উঠতে পারছি না। বাবার লাশ নিয়ে কি করবো। লাশ ফুলে যাচ্ছে। এসিও বন্ধ করে রেখেছে। আরেক যাত্রী বলেন, তার ভাইয়ের অপারেশন হয়েছে। ডাক্তার রিলিজ দিয়ে দিয়েছে এখন বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা ঘাটে বসে আছি। ফেরি পাচ্ছি না।
বিআইডব্লিউটিসির উপ মহা-ব্যবস্থাপক (এজিএম) শফিকুল ইসলাম জানান, বারবার ফিরিয়ে দেওয়ার পরেও ঘাটে যাত্রীদের চাপ বাড়ছে। আমাদের চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশনায় দিনে ফেরি বন্ধ রেখেছি আর রাতে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করছি। তবে ঘাটে অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বেশি হওয়ায় সকালে ফরিদপুর নামক একটি ফেরি দিয়ে ৮টি অ্যাম্বুলেন্স পারাপার করা হয়েছে। পাড়ে আবারও একটি ফেরি ছাড়া হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) আসাদুজ্জামান জানান, শিমুলিয়া ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ আছে। তবে বিশেষ বিবেচনায় লাশ ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স পার করা হচ্ছে। আমরা চেকপোস্ট বসিয়েছি। কোন যাত্রীবাহী যানবাহন ঘাটে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছিনা।