নিষ্পাপ শিশু শহীদ শেখ রাসেলের হত্যাকারীদের উত্তরাধিকারকে রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করতে হবে – অ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস এমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র নিষ্পাপ শিশু শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টের কালরাতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের কোনো ক্ষমা নেই। তাদের উত্তরাধিকারদেরও কোনো ক্ষমা নেই। নিষ্পাপ শিশু শহীদ শেখ রাসেলের হত্যাকারীদের উত্তরাধিকারকে রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করতে হবে। এই অপশক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে না পারলে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণ সম্ভব নয়।
গতকাল মঙ্গলবার শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ শহরে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। সভাপতি শেখ মনিরুজ্জামান রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. গোলাম মাওলা তপন, জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়িকা মোর্শেদা বেগম লিপি, কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, আওলাদ হোসেন, শ্রমিক লীগ আঞ্চলিক শিল্পাঞ্চল শাখার সভাপতি আবুল কাশেম, যুবলীগ নেতা জাহিদ হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম পলাশ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক আপন দাস প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ১৮ অক্টোবর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের নির্মম বুলেটের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বঙ্গবন্ধুর এই শিশুপুত্র শেখ রাসেল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে নরপিশাচরা নিষ্ঠুরভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। মৃত্যুকালে তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
তিনি বলেন, শহীদ শেখ রাসেল আজ বাংলাদেশের শিশু-কিশোর, তরুণ, শুভবুদ্ধিবোধ সম্পন্ন মানুষদের কাছে ভালবাসার নাম। অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকারবঞ্চিত শিশুদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে গ্রাম-গঞ্জ-শহর তথা বাংলাদেশের বিস্তৃর্ণ জনপদ-লোকালয়ে শেখ রাসেল আজ এক মানবিক সত্ত্বায় পরিণত হয়েছে। মানবিক চেতনা সম্পন্ন মানুষরা শেখ রাসেলের বিয়োগ দুঃখ বেদনাকে হৃদয়ে ধারণ করে বাংলার প্রতিটি শিশু-কিশোর তরুণের মুখে হাসি ফোটাতে আজ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিয়েছিল ছোট্ট রাসেলকে। মা, বাবা, দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচা সবার লাশের পাশ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে সবার শেষে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল রাসেলকে। ওই ছোট্ট বুকটা তখন ব্যথায় কষ্টে বেদনায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। যাদের সান্নিধ্যে স্নেহ-আদরে হেসে খেলে বড় হয়েছে তাদের নিথর দেহগুলো পড়ে থাকতে দেখে ওর মনের কী অবস্থা হয়েছিল- কী কষ্টই না ও পেয়েছিল- কেন কেন কেন আমার রাসেলকে এত কষ্ট দিয়ে কেড়ে নিল? আমি কি কোনো দিন এই কেনো’র উত্তর পাব?’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই প্রশ্নের উত্তর কী আছে? না নেই। নিদারুণ মর্মবেদনার রূঢ় বাস্তবতা বিদগ্ধ এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই!
তিনি বলেন, শেখ রাসেলের নিষ্পাপ মুখশ্রী ও তার কাকুতি-মিনতি যে নিষ্ঠুর দুর্বৃত্তদের মন টলাতে পারেনি। মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাসেলের ছোট্ট বুক বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল যে হায়েনা, তারা পৃথিবীর সকল নিকৃষ্টতম পশুকেও হার মানাবে।