নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর বাজারের ব্যবসায়ীরা করোনা ভাইরাসের কারণে প্রথম দফায় মার্কেট বন্ধের ঘোষণার পর সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। পরে গত ১০ মে থেকে মার্কেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে তারা দোকানপাট খুলে বসে। ঈদকে সামনে রেখে পূর্বের ক্ষতি পুষিয়ে উঠার জন্য ধার দেনা করে দোকানে বাড়তি মালামাল উঠায়। কিন্তু মার্কেট খোলার দুদিনের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব না মানার অজুহাতে তা পুনরায় বন্ধের ঘোষণা হলে শ্রীনগর বাজারের ব্যবসায়ীদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।
শ্রীনগর বাজারের শেখ সু স্টোরের মালিক টিটু জানান, এমনিতেই করোনা ভাইরাসের কারণে দোকানপাট বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে অর্থনৈতিক সংকটে ছিলাম। পরে মার্কেট খুলে দেওয়ার ঘোষণায় আমার মত অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি দোকানী ঈদকে সামনে রেখে ধার-দেনা করে দোকানে মালামাল তোলে। কিন্তু দুদিন পরই দোকান বন্ধের নির্দেশ আসে। এখন আগের ক্ষতিতো দূরের কথা ধার করা টাকা কিভাবে ফেরত দিব তা নিয়ে চিন্তায় আছি।
ঊর্মি ফ্যাশনের মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, সরকারের এরকম দ্বৈত সিদ্ধান্তে আমরা বেকায়দায় পড়ে গেছি। দোকানে নতুন পুঁজি লগ্নি করতে গিয়ে সুদে টাকা নিতে হয়েছে। আমাদেরকে অন্তত ঈদের আগের ক’দিন সময় দিলেও আমরা মহাজনের টাকা ফেরত দিতে পারব।
নীলাচল ফেব্রিক্সের মালিক কামাল হোসেন বলেন, দুদিন দোকান খুলে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে দোকান ভাড়া নিয়ে যারা ব্যবসা করছে তারা। দোকান ভাড়া পরিশোধের জন্য চাপ রয়েছে, তার উপর সেলসম্যানদের বেতনসহ অনুষঙ্গিক খরচতো রয়েছেই। দোকানে বাড়তি পুঁজি তার উপরে আয় নেই। এই অবস্থায় ব্যয়ের কথা চিন্তা করলে চোখে কোন পথ দেখি না।
কসমেটিক্স ব্যবসায়ী মোঃ মাসুদ বলেন, কসমেটিক্সের দোকানে শুধু বিলাস দ্রব্যই বিক্রি হয়না। বহু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসও বিক্রি হয়। করোনা ভাইরাসের কারণে বেঁচে থাকার এই সংগ্রামে শরিক হতে গিয়ে আমাদের সব কিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে। যে করেই হোক ন্যূনতম সুযোগ দিলেই আমরা বেঁচে যেতে পারি।
শ্রীনগর বাজারের এরকম বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয়। তারা জানান, শ্রীনগর বাজারে প্রশাসনের লোক বা স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অন্তত ঈদের সামনের ক’দিন যদি দোকান খোলার সুযোগ আসে তাহলে অন্তত পরিবার পরিজন নিয়ে একটু হলেও বাঁচতে পারব।