মুন্সীগঞ্জে বিধি নিষেধ মানছেনা লকডাউনে থাকা মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দারা
নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনার প্রকোপের মাঝেও সরকারী বিধি নিষেধ মানছেনা লকডাউনে থাকা মুন্সীগঞ্জ শহরের মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। লকডাউন কার্যকরের ৪র্থ দিনে মাঠপাড়ার অলি গলিতে দেখা গেছে বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষের আনাগোনা। অনেকে আবার প্রধান প্রবেশ গেটে বাঁধার মুখে পড়ায় বিকল্প পথে বাঁশের বেড়া টপকিয়ে এলাকার বাইরে বের হচ্ছে। পাশাপাশি অন্য এলাকার বাসিন্দারাও কৌশলে ঢুকে পড়ছে এলাকাটিতে। শহরের মাঠপাড়া এলাকাটিকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে আগামী ৯ জুলাই পর্যন্ত ২১ দিনের জন্য লকডাউন করে জেলা প্রশাসন। প্রথম দিন থেকে লকডাউন কঠোরভাবে কার্যকর হলেও ধীরে ধীরে এলাকার বাসিন্দাদের বাইরে চলাফেরা এবং আচার আচরণে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছেনা। সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছেনা লকডাউন। লকডাউন কার্যকর করতে সরকারী নানা সংস্থার পাশাপাশি সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকদের। সরেজমিনে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শহরের মাঠপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এলাকা জুড়ে কাজ করছে ৫টি স্বেচ্ছাসেবক টিম। বাসিন্দারা তাদের নানা প্রয়োজনের কথা ফোনে জানান স্বেচ্ছাসেক টিমের কাছে। বাসিন্দাদের ফোন পাওয়া মাত্রই বাজার নিয়ে বাসাবাড়ীতে পৌঁছে দিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকরা। রোগীর জন্য ঔষধ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, বাজার সদাইসহ বাসিন্দাদের চাহিদা পূরণ করছে তারা এবং সব আবদার পূরণ করছে স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যরা। তবুও নানা অজুহাতে বাসিন্দারা ঘর থেকে বের হচ্ছেই। অনেকেই আবার অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোথাও কোথাও স্বেচ্ছাসেবকদের বাঁধা উপেক্ষা করেই বাঁশের বেড়া টপকিয়ে এলাকার বাইরে যাচ্ছে বাসিন্দারা। তবে বাসা থেকে বেশী বের হচ্ছেন নারীরা। স্বেচ্ছাসেকবরা জানান, মাঠপাড়া এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক হয়ে কাজ করছেন মুন্সীগঞ্জ সরকারী হরগঙ্গা কলেজের ছাত্র খালেদ বিন আনসারি, অন্তর, অনিক চন্দ্র বর্মন, সুমাইয়া এলিজা, রাব্বিসহ যুব রেড ক্রিসেন্ট সদস্যরা। পাশাপাশি কাজ করছেন স্থানীয় প্রায় ৩০/৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক। লকডাউন কার্যকর করতে তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় সব আবদার এবং চাহিদা পূরণে কাজ করছে। স্বেচ্ছাসেবকরা বলছেন, বাসিন্দাদের নিত্য চাহিদা পূরণে সর্বদা প্রস্তুত তারা। কিন্তু বিশেষ করে নারী এবং কর্মজীবি মানুষগুলো প্রধান প্রবেশদ্বারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে বিকল্প পথে অন্যান্য প্রবেশ পথের বাঁশের বেড়া অতিক্রম করে বের হচ্ছে বাইরে। এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকরা বাঁধা দিলে উল্টো তাদেরকে হুমকি ধমকি দেয়। শত বাঁধা বিপত্তি আর বাসিন্দাদের আবদার পূরণ করতেও বদ্ধপরিকর স্বেচ্ছাসেবকরা। স্বেচ্ছাসেবকদের লক্ষ্য একটাই বাসিন্দারা ঘরে থাকুক এবং নিরাপদে থাকুক। লকডাউন উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হওয়া দুই নারী জানান, ঘর থেকে বের না হয়ে কি করবো ? ঘরে খাবার নেই। ঘরে বসে থাকলে খাবার দিবে কে? আরেক নারী জানান, কর্ম হারিয়ে স্বামী বেকার। ঘরে ছেলে মেয়ে আছে। ক্ষুধার জ্বালা বড় জ্বালা। বাধ্য হয়েই কাজে বের হয়েছি। লকডাউন এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা এস আই সুকান্ত জানান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং আইানশৃঙ্খলা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে শুরু থেকে লকডাউন কার্যকর করতে কাজ করছি। মানুষ নানা অজুহাত নিয়ে আসে। আমরা তাদেরকে বুঝাতে চেষ্টা করছি। অনেকে আবার বুঝার চেষ্টাও করেনা। আমরা কোনমতে বিনা প্রয়োজনে কাউকে এলাকার ভিতরে কিংবা বাইরে কোন লোক এলাকাটিতে প্রবেশ করতে দিচ্ছিনা।