নিজস্ব প্রতিবেদক
মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন লৌহজংয়ের যুবলীগ নেতা মোঃ মর্তুজা খান। লৌহজং উপজেলার হলদিয়া গ্রামের কৃতি সন্তান এই মর্তুজা এখন এলাকায় মানবতার ফেরিওয়ালা নামে পরিচিত। করোনায় মৃত ব্যক্তির খবর পেলে আত্মীয়স্বজন যেখানে শেষ দেখাটুকু করতে যায়না, সেখানে মর্তুজার এই টিম করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির গোসল, কবর খোঁড়া ও দাফনের দায়িত্ব নিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। এক সময়ের মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের নেতা বর্তমানে লৌহজং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদে রয়েছেন। আগাম বন্যায় কৃষকের ডুবে যাওয়া ধান কেটে দেয়া, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে পরিবেশকে রক্ষা করতে বৃক্ষ রোপণ ও করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন সব মিলিয়ে মহানুভবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মর্তুজার এই টিমটি। এবা গ্রুপের সার্বিক সহযোগিতায় পিপিই, মাস্ক ও হ্যান্ডস স্যানিটাইজারসহ করোনা ভাইরাস থেকে আত্মরক্ষার্তে সকল প্রকার প্রটেক্ট সামগ্রী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানটির এমডি মোঃ সাজ্জাদ হোসেন শিপন মৃধা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন করোনায় আক্রান্ত মৃত মানুষের দাফন কাফনের সার্বিক সহযোগিতায়। যুবলীগ নেতা মর্তুজা খান জানান, করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে মানুষের ভিতর আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মানুষকে কেউ দাফন কাফন করতে চায়না। এমনকি তার আত্মীয়স্বজনরা কেউ কাছে আসেনা। লাশের জানাজায় কেউ আসেনা, কবর খুঁড়তে কাউকে পাওয়া যায়না। এ বিষয়গুলো আমাকে যন্ত্রণা দেয়, মনে প্রচন্ড আঘাত পাই। এরপর থেকে আমি নিজে সিদ্ধান্ত নেই। আমি নিজেই করোনায় মৃত ব্যক্তির কবর খোঁড়া, লাশের গোসল ও দাফনের দায়িত্ব নেই। আলাপ করি আমার সহযোদ্ধা রইস উদ্দিন রঞ্জু, দিদার হাসান মোল্লা, সারোয়ার টিটুর সাথে। আমি তাদের কাছ থেকে প্রচন্ড সাড়া পাই মনের শক্তি আরও বৃদ্ধি হয়। এরপর থেকে যেখান থেকে করোনায় মৃত্যুর খবর আসে আমিসহ আমার টিম সেখানে ছুটে যাই। এ পর্যন্ত লৌহজং উপজেলাসহ আশপাশের উপজেলাগুলো মিলে প্রায় অর্ধশতাধিক করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশের দাফন কাজ করি। করোনার আতঙ্কের কথা জিঞ্জেস করলে তিনি জানান, জন্মেছি যেহেতু মৃত্যুর স্বাদ একদিন গ্রহণ করতে হবেই। তাছাড়া ভয় করে লাভ কি ? এ পথে আমার মৃত্যু থাকলে তা কেউ রুখতে পারবে না। সবকিছু ভেবেচিন্তে এবং মরণকে বরণ করেই আমরা ১৫ জন যুবক এ পথে পা দিয়েছি। জানিনা এতে মানুষের কতটুকু মঙ্গল হবে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ঢাকার একটি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান লৌহজং উপজেলার মৌছামান্দ্রা গ্রামের এক ব্যক্তি। বেলা ১২টায় তার জানাজা শেষে হলদিয়ার গোয়ালীমান্দ্রা কবরস্থানে মর্তুজার টিম তার দাফন করেন।
লৌহজংয়ে করোনায় মারা যাওয়া অর্ধশতাধিক লাশের দাফন করলেন মর্তুজার টিম
আগের পোস্ট