নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদযাত্রার শেষদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে। শিমুলিয়া লঞ্চঘাটে যাত্রীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। শৃঙ্খলা রক্ষায় ঘাট জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। ফেরিঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি আর লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। ভোর থেকেই মোটরসাইকেল এবং সাধারণ যাত্রী দখলে নেয় ফেরিগুলো। ফেরিগুলো পাড়ি দিতে হচ্ছে যাত্রী নিয়ে। বিশেষ করে লঞ্চঘাটে সকাল থেকেই যাত্রীদের গাদাগাদি। লঞ্চে মানা হচ্ছেনা নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি। অর্ধেক যাত্রী ধারণের কথা থাকলেও অধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করছে। ঈদযাত্রায় যাত্রীদের হুড়োহুড়িতে লঞ্চঘাটে উপেক্ষিত থাকছে স্বাস্থ্যবিধি সামাজিক দূরত্ব। এদিকে পদ্মার তীব্র স্রোত, গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বাড়ায় ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় অবস্থান করছে শত শত ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক। এছাড়া ঘাটের অভিমুুখে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পারাপারের অপেক্ষায় শত শত পণ্যবাহী ট্রাক। ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে নৌরুটে বর্তমানে ১৫টি ফেরি ও ৮৪টি লঞ্চ সচল রয়েছে। এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ জানান, নৌরুটে বর্তমানে ১৫টি ফেরি সচল রয়েছে। ঘাট এলাকায় পারাপারের জন্য যাত্রী ও পণ্যবাহী মিলিয়ে ৬ শতাধিক যানবাহন রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল যানবাহন পারাপার করা হবে। তবে সকাল থেকে যাত্রী এবং মোটরসাইকেলের চাপ রয়েছে ফেরিগুলোতে। বেশ কয়েকটি ফেরি ছাড়তে হয়েছে শুধু যাত্রী ও মোটরসাইকেল নিয়ে। বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের মেরিন কর্মকর্তা জানান, নদীতে পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ঘাটে যেতে ফেরিগুলোর দ্বিগুণ সময় লাগছে। প্রতিটি ফেরিকে স্রোতের বিপরীতে ও নদীতে ৩-৪ কিলোমিটার অধিক পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। এদিকে, গতকাল সোমবার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় যানবাহনে করে হাজার হাজার মানুষ আসতে শুরু করে শিমুলিয়ায়। পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় যাত্রীর চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। লঞ্চ, ফেরি যে যেভাবে পারছেন পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, অর্ধেক যাত্রী ধারণের কথা থাকলেও ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়েই অধিকাংশ লঞ্চ চলাচল করছে। বিআইডব্লিউটিএ শিমুলিয়া নদীবন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে শেষ সময়ে মানুষের চাপ পড়েছে। নৌরুটে বর্তমানে ৮৪টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। সকাল থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত নৌরুটে লঞ্চের ১১২টি ট্রিপ হয়েছে। এসব লঞ্চে আনুমানিক ১২ হাজার যাত্রী পদ্মা পারপার করেছে। লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসাইন বলেন, গার্মেন্টস বন্ধ দেয়ার কারণে যাত্রীদের চাপ অত্যাধিক। আমাদের পক্ষ থেকে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে ও লঞ্চে নির্ধারিত যাত্রী তোলার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুরো ঘাট জুড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন স্তরের তিন শতাধিক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।