নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীনগরে সোহেল সিকদার (৩৫) নামের এক যুবককে অপহরণ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার একটি ফোন রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার উত্তর বালাশুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, উপজেলার উত্তর বালাশুর গ্রামের মৃত জালাল ফকিরের জামাতা সোহেল সিকদারকে অপহরণ করে একদল দুর্বৃত্ত। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে হাত পা বাঁধা অবস্থায় তাকে স্থানীয়রা ভাগ্যকুল ইউনিয়নের বালাশুর শ্মশান এলাকা থেকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজনকে খবর দিলে তারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে তাকে শনাক্ত করে। এ ঘটনায় সোহেল সিকদারের ভাই শামিম সিকদার শ্রীনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তার ভাই সোহেল সিকদারের সাথে গত ৩ বছর আগে মৃত জালাল ফকিরের মেয়ে নুপুর (২২) এর ইসলামিক শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ হয়। বিয়ের আগে নুর আলম (২৫) পিতা সামচু শেখ সাং উত্তর বালাশুর নতুন বাজার, নুপুরকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলো। উক্ত প্রস্তাবে নুপুরের আত্মীয়স্বজনরা রাজী না হওয়ায় এবং পরবর্তীতে আমার বড় ভাই নুপুরকে বিবাহ করায় নুর আলম নানা সময় আমার ভাইকে ক্ষতি করিবে বলে ভয়ভীতি দেখাতো। গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে বালাশুর এতিমখানা এলাকা থেকে আমার ভাইকে একা পেয়ে নুর আলম ও তার ৩/৪ জন সহযোগী হত্যার উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যায় এবং তার সাথে থাকা এক লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। এসময় উক্ত বিবাদীরা আমার ভাইকে পার্শ্ববর্তী নির্জন চকে টেনে নেওয়ার সময় ভাইয়ের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসিতে থাকলে সকল বিবাদীরা সুযোগমত পেলে আমার ভাইকে খুন করে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে দ্রুত চলে যায়।
অপহরণ হওয়া সোহেল সিকদার জানান, নুর আলম পিতা সামচু শেখ, মৃদুল পিতা মৃত আলমগীর, মামুন ও আর একজন ছিলো যাকে আমি দেখলে চিনবো। ওরা চারজন মিলে আমাকে তুলে নিয়ে যায়। আমাকে অনেক মারধর করে বালাশুর শ্মশান এলাকায় হাত পা বেধে রাখে এবং অনেক রাতে গিয়ে আমাকে হত্যা করবে বলে চলে আসে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা পেয়ে আমাকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ বিষয়ে নুপুরের বড় বোন জুঁই জানান, আমার ছোট বোনকে বিয়ে করতে না পেরে আমার ছোট বোনের স্বামী সোহেলকে নুর আলম নানা সময় মারধর করতো। এর আগেও দুইবার আমার ছোট বোনের স্বামীকে মারধর করেছে যার বিচার স্থানীয় মেম্বার আজিজুলকে জানিয়েও সুবিচার পাইনি। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমার ছোট বোনের স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যায় নুর আলম, মৃদল, মামুন সহ বেশ কয়েকজন। পরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায় তারা সোহেলকে জবাই করে ফেলবে। পারলে যাতে বাঁচাই বলে হুমকি ধমকি দেয়। যার একটি ফোন রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে নুর আলম, মৃদুল, মামুনদের বাড়িতে গিয়েও তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হেদায়াতুল ইসলাম ভূঞা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।