নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে প্রথম স্ত্রীর আত্মহত্যার পর দ্বিতীয় স্ত্রী জুঁই আক্তার (১৯) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার শ্রীনগর সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আরধীপাড়া কানাইনগর এলাকায় এ রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দ্বিতীয় স্ত্রী জুঁই আক্তার (১৯) এর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেন। নিহত জুঁই আক্তার ঐ এলাকার শাকিলের দ্বিতীয় স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ মাস পূর্বে নিহত জুঁই আক্তার (১৯) এর সাথে একই এলাকার মৃত রব শেখের ছেলে শাকিল (২৫) এর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই জুঁই আক্তারের সাথে তার স্বামী ও শাশুড়ি মাজেদা বেগমের পারিবারিক ঝগড়া চলে আসছিল। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শাশুড়ির সাথে জুঁইয়ের কথা কাটাকাটি হয়। বিকেল ৩টার দিকে স্বামীর বসতবাড়ির উত্তর পাশে টিনের বেড়াবেষ্টিত গোসলখানার আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে জুঁইকে ঝুলন্ত দেখে স্বামী শাকিল ও সিয়াম তাকে নিচে নামিয়ে পাশেই আত্মীয় কামরুলের বসতঘরে নিয়ে যায়। ঐখান থেকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত জুঁইয়ের ভাই জাহিদুল জানান, ওরা আমার ছোট বোন জুঁইকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে। এটা আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যা। শার্কিলের প্রথম স্ত্রী আত্মহত্যা করায় তার সাথে আমার বোনের বিবাহ দিতে চাইনি। পরে ছেলের মামাসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজনরা লিখিত দেয় যে কিছু হবে না। কিছু হলে আমরা দায় নিব বলে আশ্বাস দিলে আমরা বিয়ে দেই।
নিহতের মা নজিমন বেগম জানান, শাকিলের ১ম বউ মিথিলা তাদের সাথে পারিবারিক কলহের কারণে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় তার বাবার বাড়ীতে গিয়ে দুই সন্তান রেখে আত্মহত্যা করার ৬ মাস পর শাকিলের মামারা আমার মেয়ে জুঁইকে শাকিলের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্ত আমরা বিয়ে দিতে চাইনি। একরকম জোর করেই তার মামারা আমার মেয়েকে নিয়ে বিয়ে দেয়।
শ্রীনগর সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, স্থানীয়রা সংবাদ দিলে আমি ঘটনাস্থলে এসে জুঁইয়ের লাশ উঠানে দেখতে পাই। তাদের মধ্যে যে পারিবারিক ঝামেলা চলছিল তা আমার কাছে জানায়নি।
শ্রীনগর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) শান্তি দাস বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেছি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।