নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণি, পেশা নির্বিশেষে সকল মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। যত ধরনের মতাদর্শগত বিভেদ থাকুক না কেন, ধর্মীয় পরিচিতির ভিত্তিতে না দেখে মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখার প্রয়োজনীয়তাই আজ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। মতাদর্শগত অসহনশীলতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে।
মুন্সীগঞ্জ শ্রী শ্রী জয় কালিমাতা মন্দিরে অনুষ্ঠিত জেলা পূজা উদযাপন কমিটির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী সমর ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শ্রী অজয় চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক সুবির চক্রবর্তী, পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নবীন রায়, শ্রী শ্রী জয় কালিমাতা মন্দিরের সভাপতি পবিত্র শঙ্কর চ্যাটার্জি কাজল এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, প্রতিটি নাগরিক তার নিজ নিজ ধর্ম সম্মানের সঙ্গে পালন করবেন। এটাই ছিল ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চেতনা। সেই চেতনায়ই গড়ে উঠেছে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘রাজনীতিতে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান বলে কিছু নেই। আমার কাছে সবাই মানুষ।’ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেভাবেই মানুষকে দেখতেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় অংশের ৮নং অনুচ্ছেদে উল্লিখিত চারটি রাষ্ট্রীয় মূলনীতির অন্যতম হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা। এ ব্যাপারে সংবিধানে বলা হয়েছে- ‘(১) সব ধরনের সাম্প্রদায়িকতা, (২) রাষ্ট্র কর্তৃক কোনো ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা, (৩) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার, (৪) নির্দিষ্ট একটি ধর্মের ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের বৈষম্য অথবা নিপীড়ন প্রভৃতি বিলোপ করে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়িত করা হবে।’
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও কার্যকর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে পূজা উদযাপন পরিষদ। পূজা উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী সবচেয়ে বৃহৎ সংগঠন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা উদার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার ও সমমর্যাদা রয়েছে। শ্রেণি-বর্ণ, ধনী-গরীব, রাজা-প্রজা সকলের সমান অধিকার। সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজস্ব ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মাধ্যমে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীগণ পাশাপাশি বসবাস করছে। সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে সমুন্নত রাখতে হবে। সমাজে সৌহার্দ্য, সাম্য, শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় আত্ম-সংযম ও আত্মত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হতে হবে।