নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে কোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কড়ই গাছ কেটে বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষিকা জহুরা আসমার বিরুদ্ধে। গতকাল রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তথ্য জানতে গেলে বিদ্যালয়ের ভিতরে বসে থাকা একটি সংঘবদ্ধ দল সাংবাদিকদের হুমকি দেয়। হুমকির বিষয়ে বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় জিডি করেছেন সাংবাদিক মেহেদী সুমন। গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের গাছটি ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন প্রধান শিক্ষিকা, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১০ হাজার টাকা। বিদ্যালয়ের গাছ কাটতে হলে পরিচালনা কমিটির রেজুলেশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার কথা থাকলেও নিয়মবহির্ভূতভাবে গাছ বিক্রি করছেন তিনি। সরেজমিনে বিষয়টি জানতে গেলে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয় কোলা গ্রামের সিদ্দিক মিজির ছেলে মহসিন ও তার সাথে থাকা কয়েকজন যুবক। সেসময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে বসা ছিলেন কোলা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মিন্টু, মহিলা ইউপি সদস্য রওশন আরা ও ওয়ার্ড মেম্বার সুজনসহ বেশ কয়েকজন। তাদের সামনে মহসিন হুমকি দিয়ে বলেন, কোলা ইউনিয়নে সাংবাদিক প্রবেশ করতে হলে চেয়ারম্যান ও তাদের নিকট থেকে অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিয়ে প্রবশে করলে হাত-পা ভেঙ্গে ফেলবে। বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানীয়রা জানায়, কোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পার্শ্বের গাছটি অবৈধভাবে কেটে বিক্রি করেছেন প্রধান শিক্ষিকা। এছাড়া তার বিরুদ্ধে রয়েছে প্রতিবছর বিদ্যালয়ের স্লিপের ও সরকারি বিভিন্ন টাকা প্রয়োজীনয় খাতে ব্যবহার না করে নিজে আত্মসাৎ করার অভিযোগ। বিদ্যালয়ের একটি পুকুরের মাছ বিক্রি ও ৬টি দোকান ভাড়ার টাকা বিদ্যালয় ফান্ডে জমা করে নিজেই খরচ করেন। আরো জানা যায়, কিছুদিন আগেও বিদ্যালয়ের আরো একটি গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। বিদ্যালয়ের জন্য সরকার থেকে একটি ল্যাপটপ দেয়া হয়েছিল সেটিও বিদ্যালয়ে নেই। প্রধান শিক্ষিকা জহুরা আসমা বলেন, আমি শিক্ষা অফিসে দরখাস্ত দিয়েছি। অনুমতি পেয়েই কেটেছি। এগুলো সব মিথ্যা কথা, আমি কোন অনিয়ম করিনাই। কোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মিন্টু জানান, কোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটেছে কিছুদিন আগে। তাছাড়া গাছ কাটার বিষয়টি শুনেছি। এসব নিয়ে আমরা বিদ্যালয় কক্ষে বসেছিলাম। নির্বাচনের পর এখনো শপথ হয়নাই, তাই শপথের পর বিষয়টি জেনে মীমাংসা ও ব্যবস্থা নিবো। সাংবাদিকদের সাথে মহসিন কথা কাটাকাটি করেছে আমরা তাকে ধমক দিয়েছি। উপজেলা শিক্ষা অফিসার বেলায়েত হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে দরখাস্ত করেছে। আমরা এখনো অনুমতি দেইনাই। উপজেলার ১০টি স্কুল দরখাস্ত দিয়েছিলো, দুটি স্কুল অনুমতি পেয়েছে। তারা যখন দরখাস্ত দিয়েছে তখন ক্লোজড হয়ে গেছে। সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে দরখাস্ত করতে হয়, বিদ্যালয়ের কমিটির রেজুলেশনসহ। গাছ কাটতে বা বিক্রি করতে তাদের কোন অনুমতি দেওয়া হয় নাই।
সিরাজদিখানে সরকারি বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির অভিযোগ
আগের পোস্ট