স্বাস্থ্য প্রতিবেদক
দীর্ঘ সময় ধরে বাড়িতে থাকার কারণে আমরা অনেকেই অনেক কাজে দক্ষ হয়ে উঠছি। কেউ ছবি আঁকায়, কেউ হাতের কাজে, কেউবা রান্নায়। নতুন নতুন রান্না শেখার আগ্রহ বেড়ে চলেছে। তবে আমরা সবাই যে রান্নায় দক্ষ এমন কিন্তু নয়। অভিজ্ঞতা না থাকলে সুস্বাদু রান্নাও বিস্বাদ হয়ে যেতে পারে। তাইতো অনলাইন টিউটোরিয়ালের উপর নির্ভর করেন অনেকে। যদিও এসব টিউটোরিয়াল আপনাকে রান্নার কাজে দক্ষ করে তুলতে পারে তবু বেশিরভাগ সময়ে এই রেসিপিগুলো কিছুটা অস্বাস্থ্যকর এবং অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত হয়ে যায়। আপনি যদি রান্নার কাজে নতুন হয়ে থাকেন তবে শিখে নিতে পারেন সহজ কিছু অদল-বদল। এতে করে খাবারগুলো স্বাস্থ্যকর ও কম ক্যালোরিযুক্ত হবে-
মাখন বা তেলের পরিবর্তে কলা: কেকের জন্য এখন আর দোকানের উপর নির্ভরশীল নয়, বাড়িতেই তৈরি করে নিচ্ছেন যে যার মতো। কেক তৈরিতে বেশ খানিকটা মাখন কিংবা তেলের প্রয়োজন হয়। কেকটিকে স্বাস্থ্যকর করতে চাইলে এর পরিবর্তে পাকা কলা ব্যবহার করতে পারেন। এককাপ মাখনে প্রায় ১৬২৮ ক্যালোরি এবং ১১৬ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এককাপ কলায় মাত্র ২০০ ক্যালোরি এবং আধা গ্রামের চেয়ে কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে। কলা পটাশিয়াম, ফাইবার এবং বি ভিটামিন সমৃদ্ধ।
লবণের পরিবর্তে ভেষজ: লবণ ছাড়া খাবারের স্বাদ হয় না, এমন ধারণা প্রায় সবারই। তবে এটি পুরোপুরি সত্যি নয়। খাবারে স্বাদ আনার জন্য অতিরিক্ত লবণ ব্যবহারের দরকার নেই। সোডিয়ামের অতিরিক্ত ঝুঁকি ছাড়াই খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য আপনি তাজা ভেষজ এবং সিট্রাস জুসের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।
চিনির পরিবর্তে ভ্যানিলা নির্যাস/দারুচিনি/মধু: প্রতিদিনের খাবারের মাধ্যমে অজান্তেই আমাদের পেটে বেশ খানিকটা চিনি চলে যায়। তাই রান্নার সময় সচেতনভাবে চিনিটা বাদ দিতে পারলে বেশ ভালো। ক্যালোরি কমানোর জন্য চিনির পরিবর্তে ভ্যানিলা নির্যাস ব্যবহার করতে পারেন। এককাপ চিনিতে ৭৭৪ ক্যালোরি রয়েছে, তাই আপনি আধাকাপ চিনি এবং আধা চা চামচ ভ্যানিলা এক্সট্রাক্ট ব্যবহার করতে পারেন, এটি অর্ধেক ক্যালরি কেটে ফেলবে। তেমনই খাবারকে স্বাস্থ্যকর করতে চিনির জায়গায় মধু বা দারুচিনিও ব্যবহার করতে পারেন।
মেয়োনিজের পরিবর্তে অ্যাভোকাডো: অ্যাভোকাডোস মনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের একটি ভালো উৎস, যা হার্টের পক্ষে ভালো। মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও হ্রাস করে। পরেরবার সালাদ তৈরির সময় মেয়োনিজের পরিবর্তে অ্যাভোকাডো ম্যাস যোগ করুন।
আলুর পরিবর্তে মিষ্টি আলু: আলুর জায়গায় মিষ্টি আলু নির্বাচন করাতে ফাইবার, ভিটামিন সি, এ এবং বি ৬ এর অতিরিক্ত ডোজ যুক্ত হয়। মিষ্টি আলু আপনাকে প্রতি কাপে ২০টি কার্বোহাইড্রেট কাটাতে সহায়তা করে। সাদা আলুও স্বাস্থ্যকর তবে রান্নার সময় মিষ্টি আলুর সাথে অদলবদল করে আপনার খাবারকে স্বাস্থ্যকর করে তুলতে পারেন।
টমেটো সসের পরিবর্তে কাটা টমেটো: বাজারে কেনা টমেটো সস চিনি, সোডিয়াম এবং প্রিজারভেটিভ দিয়ে পূর্ণ। আপনি যখন ঘরে পিজ্জা তৈরি করছেন, তখন বাড়িতে কিছু টমেটো সস তৈরি করুন বা কিছু কাটা টমেটো ব্যবহার করুন। টেক্সচারটি একই হবে না তবে স্বাদটি আরও প্রাণবন্ত এবং তাজা হবে।
সাদা ভাতের পরিবর্তে ব্রাউন রাইস: সাদা চাল প্রক্রিয়াজাত করা হয়। সাদা ভাতে ফাইবারের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলো থাকে না। সুতরাং ভাত খেতে চাইলে বাদামী চাল বেছে নিন। এটি পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং ওজন হ্রাস করার জন্য ভালো।
ক্রিমের পরিবর্তে নারিকেলের দুধ: স্যুপ এবং স্ট্যু তৈরির সময়, নারিকেলের দুধ ক্রিমের সর্বোত্তম বিকল্প হিসাবে কাজ করে।
ভাজা ডিমের পরিবর্তে সেদ্ধ ডিম: ভাজা ডিমের পরিবর্তে সেদ্ধ ডিম ব্যবহার করা কেবল ক্যালোরিই কাটায় না সেইসঙ্গে স্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্রহণের পরিমাণও হ্রাস করে। সেদ্ধ ডিম দ্রুত প্রোটিনযুক্ত নাস্তা তৈরির জন্য ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরিতে যেসব উপাদান এড়িয়ে চলবেন
আগের পোস্ট