নিজস্ব প্রতিবেদক
অমর একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এক বিবৃতিতেÑ বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মদানকারী রফিক, শফিক, বরকত, সালাম, জব্বারসহ সকল ভাষা শহীদ এবং বাংলা ভাষা-সংস্কৃতি ও বাঙালির জাতীয়তাবাদী চেতনা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যেসকল দেশহিতৈষী মহৎপ্রাণ ব্যক্তিবর্গ আত্মত্যাগ করেছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
বাণীতে মৃণাল কান্তি দাস বলেন, অমর একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ জাগরণের দিনÑ দেশমাতার প্রতি অকুণ্ঠ ভালোবাসা এবং বীরত্ব ও মুক্তির মহামন্ত্রে উজ্জীবিত হওয়ার দিন।
তিনি বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালির আত্মপরিচয়ের অনন্য স্মারক। ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙালির ‘শহিদ দিবস’। জাতীয় শোকের দিন। দেশমাতৃকা ও মাতৃভাষার প্রতি হৃদয়ের সকল অনুভূতি দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ ও মাতৃভূমির জন্য আত্মনিবেদনের অনুপ্রেরণা জাগানিয়া মহান দিন। কালের আবর্তে এখন এই দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদায় অভিষিক্ত।
তিনি বলেন, বাঙালির হাজার বছরের সংগ্রামের ইতিহাসে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি এক উজ্জ্বল মাইলফলক। পাকিস্তানি দুঃশাসন ও শোষণের শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতিসত্ত্বা বিনির্মাণের প্রথম সোপান। ১৯৪৮ সালে ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে শুরু হয় বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির স্বতন্ত্রতা রক্ষার সংগ্রাম। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ‘‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’’ ঘোষণা করলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পূর্ববাংলার ছাত্র-জনতা। বাংলার ছাত্রসমাজ এই ঘোষণার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ঢাকার রাজপথে। ‘‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” স্লোগানে প্রকম্পিত করে সারা পূর্ববাংলা। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে প্রাণ-উৎসর্গ করেছিলেন রফিক, শফিক, বরকত, সালাম, জব্বারসহ বাংলা মায়ের একগুচ্ছ সন্তান।
তিনি আরও বলেন, ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে জাগ্রত সাংস্কৃতিক বোধ ও জাতীয়তাবাদী চেতনা থেকেই বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে জন্মলাভ করেছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। সেই আদর্শকে ধারণ করেই বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কালজয়ী নেতৃত্বে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ কল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণের সংগ্রামে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, একুশ মানে মাথা নত না করা। একুশের শত্রু সাম্প্রদায়িকতা। একুশের প্রতিপক্ষ ধর্মান্ধতাÑ উগ্র-জঙ্গিবাদ। একুশের চেতনা ভাষা ও সংস্কৃতিভিত্তিক জাতীয়তার দ্যোতক। একুশ একটি ভেদ-বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের অনন্ত প্রেরণার উৎস। একুশ মানে মানুষে মানুষে, জাতিতে জাতিতে, দেশে দেশে, সংস্কৃতিতে সংস্কৃতিতে মেলবন্ধন। একুশ মানে মানবিক মর্যাদায় বাঁচতে শেখা। একুশ মানে বিশ্বসভ্যতার আলোকবর্তিকা।