ফিচার প্রতিবেদক
অ্যালার্জি বলতে পরিবেশে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়াজাত সংক্রমণ। পরিবেশের কিছু কিছু উপাদান আছে যা সবার পক্ষে ক্ষতিকর না হলেও কিছু কিছু মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর। ওই উপাদান থাকতে পারে সবজির মধ্যে, মাছের মধ্যে বা অন্য কোনো মাধ্যমে। এই উপাদানগুলোকে বলা হয় অ্যালার্জেন্স। এই অ্যালার্জেন্স শরীরের সংস্পর্শে আসলে তখন অ্যালার্জি হয়।
অ্যালার্জির একটা প্রবণতা আছে। সেই প্রবণতার নাম হলো অ্যাটোপি। এটা মূলত জেনেটিক মানে বংশ পরম্পরা সূত্রে হতে পারে। আর যারা এরকম বংশ পরম্পরা সূত্রেই অ্যালার্জির প্রবণতায় আক্রান্ত, তাদের বলা হয় অ্যাটোপিক। যখন এই অ্যাটোপিক মানুষরা অ্যালার্জেন্সের সংস্পর্শে আসে, তখনই অ্যালার্জি হয়ে থাকে। পরাগ বা পুষ্পরেণু ও কিছু খাবার খুব সাধারণ কিছু অতিপ্রতিক্রিয়া-উৎপাদক। ধাতবসহ অন্যান্য বস্তুও সমস্যা তৈরি করতে পারে। খাবার, কীটপতঙ্গের হুল ও ওষুধ তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির জন্য দায়ী।
খাদ্যে অ্যালার্জি থেকে তৈরি হওয়া এক অস্বাভাবিক ইমিউন প্রতিক্রিয়া। এতে চুলকানি, জিহ্বা ফুলে ওঠা, বমি, ডায়রিয়া, হাইভ, শ্বাসকষ্ট বা রক্তচাপ কম হয়ে যেতে পারে। সাধারণত গরুর দুধ, চিনাবাদাম, ডিম, শেলফিশ, মাছ, গাছ বাদাম, সয়া, গম, চাল এবং ফলের মাধ্যমে খাদ্যে অ্যালার্জি হতে পারে।
অ্যালার্জি কীভাবে হয়ঃ
যখন কোনো মানুষ, যিনি অ্যালার্জিপ্রবণ, তিনি যখন কোনো অ্যালার্জির উপাদানের সংস্পর্শে আসেন, তখন সেই অ্যালার্জির উপাদান শরীরে প্রবেশ করে আর অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই অ্যান্টিবডি কিছু নির্দিষ্ট কোষে, যাদের বলে মাস্ট সেল, তাদের সংস্পর্শে আসে। আর এই মাস্ট সেলের সংস্পর্শে আসতেই মাস্ট সেল প্রতিক্রিয়া জানায় হিস্টামাইন নামক এক ধরনের উপাদান নিঃসরণের মাধ্যমে। আর যখনই এটা নিঃসৃত হয়, তখনই আমাদের অ্যালার্জির জ্বালা, চুলকানি শুরু হয়।
ধুলাবালি থেকে অ্যালার্জি
এটি খুবই কমন অ্যালার্জি। সাধারণত এত দূষণ, ধোঁয়া, ধুলাবালি, এই সবই অনেকের শরীর নিতে পারে না। আর যখন এই সবের ক্ষতিকর উপাদান শরীরের সংস্পর্শে আসে, তখনই হয় অ্যালার্জি। একে অনেকে ডাস্ট অ্যালার্জি বলে। এর ফলে মূলত চোখ, নাক সব জ্বালা করে। খুবই কাশি হয়, মুখ লাল হয়ে যায়।
মাস্ক ব্যবহার করুন
অ্যালার্জি হয় শরীরে অ্যালার্জি হওয়ার উপাদান প্রবেশ করলে। তা যদি ওই অ্যালার্জি হওয়ার উপাদান শরীরে না প্রবেশ করে তাহলে কিন্তু অ্যালার্জি আর হয় না। আর ঠিক সেই জন্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।
অ্যাস্থমা অ্যালার্জি
অ্যালার্জি যখন বাইরে চাপ চাপ হয়ে প্রকাশ পায় না, কিন্তু প্রকাশ পায় খুব কাশির মাধ্যমে তখন ধরা হয় যে অ্যাস্থমা অ্যালার্জি হয়েছে। এই অ্যালার্জি হয় তখনই যখন কিছু বিশেষ উপাদান আমাদের শরীরে প্রবেশ করে আর বুক এবং ফুসফুসকে আক্রমণ করে। এই উপাদানগুলো তারপর ফুসফুসে গিয়ে জমা হয় আর অ্যালার্জি শুরু হয়।
খাবার থেকে শরীরে অ্যালার্জি
অ্যালার্জি হলে আমাদের ত্বক লালচে হয়ে যায় আর খুব চুলকায়। আর হয় হাইভ। হাইভ হলো এক ধরনের সাদা সাদা র্যাশের মতো জিনিস, যা হলে খুব চুলকায়। এগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হয় খাবারের থেকে অ্যালার্জি হলে। ডিম, বেগুন, চিংড়ি এগুলোই হলো বিশেষ উপাদান এই ধরনের অ্যালার্জি হওয়ার জন্য।