নিজস্ব প্রতিবেদক
সবসময় বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষার সক্ষমতা অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (৩০ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে নৌবাহিনীতে ২টি টহল বিমান সংযোজন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সবসময় আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ চাই না। কিন্তু ভবিষ্যতের আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষার জন্য আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। যাতে আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সব সময় আমরা ধরে রাখতে পারি। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করছি।
তিনি বলেন, আজকে একদিকে মিয়ানমার, একদিকে ভারত, এ দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেও আমরা সমুদ্রসীমা অর্জন করতে সক্ষম হই। এক লাখ আঠারো হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার বিশাল সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। যেহেতু আমরা বিশাল সমুদ্রসীমা পেয়েছি আমাদের শক্তিশালী নৌবাহিনী দরকার, যেটা জাতির পিতারও স্বপ্ন ছিল, আমরা সেটাই করতে চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্রের তলদেশ থেকে শুরু করে সমুদ্র এবং আকাশ সবই যাতে সুরক্ষিত থাকে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে আমাদের নৌ বাহিনীকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছি। শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়তে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম টহল বিমান এবং সাবমেরিনসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় নৌ-বহরে ‘বানৌজা নবযাত্রা’ ও ‘বানৌজা জয়যাত্রা’ নামক দুটি সাবমেরিন সংযোজনের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্রাফটের (এমপিএ) গুরুত্বের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের গভীর সমুদ্রে নজরদারি, উদ্ধার অভিযান ও অন্যান্য অপারেশনাল কার্যক্রমে এমপিএর কার্যকারিতা অপরিসীম। তিনি বলেন, এই দুটি নতুন এমপিএ সংযোজনের মাধ্যমে নেভাল এভিয়েশনের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমাদের যে জলসীমা, বিশেষ করে সমুদ্র সম্পদ যাতে আমাদের অর্থনীতিতে ব্যবহার করতে পারি সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
সমুদ্রসীমা সুরক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন দুযোর্গে নৌবাহিনীর সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের নৌবাহিনীর সদস্যরা প্রতিনিয়ত লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে অনেক প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে সমুদ্র এলাকার সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করছে, যা প্রশংসার দাবিদার।
উল্লেখ্য, দেশের সমুদ্রসীমা সুরক্ষায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নেভাল এভিয়েশনে সংযোজিত হলো আধুনিক আরও ২টি টহল বিমান (মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট, এমপিএ)। গণভবন থেকে ভিডিও টেলিকনফারেন্সে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌবাহিনীতে এমপিএ ২টি সংযোজন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী নামফলক উন্মেচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও টেলিকনফারেন্সে যুক্ত হলে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল তাকে স্বাগত জানান। এসময় নেভাল এভিয়েশনের একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে নৌ সদর দপ্তরের পিএসও, চট্টগ্রামসহ অন্যান্য নৌ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডাররা, মুক্তিযোদ্ধা নৌ কমান্ডোসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আক্রমণ ঠেকানোর সক্ষমতা অর্জন করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
আগের পোস্ট