নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের কালিরচর এলাকায় সেতু নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিপুল পরিমাণ টাকা ধরে রাখার স্বার্থে ইটের ভালো রাস্তা কেটে সেখানে পাকা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে বলে এ বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে এর নির্মাণ কাজ নিয়ে। এখানে কোন পাকা সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ছিলো না বলে এখানকার একাধিক মানুষ এ বিষয়ে অভিমত প্রকাশ করেছেন। শুধুমাত্র প্রজেক্টের টাকা আত্নসাৎ করার লক্ষ্যে ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে এখানে পাকা আরসি সেতু নির্মাণের তোড়জোর চলছে এখন। চলমান বর্ষা ও বন্যার কারণে এখানে এ সেতু নির্মাণের কাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে সাময়িকভাবে। বন্যার পানি সরে গেলে এখানে আবার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। আধারা ইউনিয়নের জন্য সরকারিভাবে একটি প্রকল্পের জন্য প্রায় ৪১ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। জুন ক্লোজিংয়ের মধ্যে এখানে ঐ প্রকল্পের কাজ করা না হলে সে টাকা ফেরত যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। সেই লক্ষ্যে প্রকল্পের টাকা ধরে রাখতে চলমান বন্যা ও বর্ষার মধ্যে কালিরচরের ইটের ভালো রাস্তা কেটে সেখানে পাকা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। বর্ষা ও বন্যার কারণে সেই কাজ আবার বন্ধ হয়ে যায়। এ কাজ নিয়ে নানামুখি প্রশ্ন উঠেছে কেন ভালো রাস্তা কেটে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে এখানে। এর স্বার্থ কার? বর্তমানে সিকিভাগ নির্মিত সেতুর উপরে কাঠের পাটাতন বসানো হয়েছে মোটর সাইকেল ও অটো বা মিশুক চলাচলের জন্য। এখানে পুরোদমে কাজ শুরু হলে এ চলাচলও বন্ধ হয়ে যাবে বলে এলাকাবাসী মনে করছেন।
বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পূর্ব দিকের খালের পাড়ে হচ্ছে কালিরচর গ্রাম। এখানে দীর্ঘ বছর ধরে এ পথের মানুষেরা প্রথমে মাটির রাস্তায় চলাচল করতো। পরে এখানে ইট বিছানো হয়। আর রাস্তার দু’পাশে রয়েছে অসংখ্য গাছপালা। এ গাছপালা প্রমাণ করে এ রাস্তাটি অনেক পুরনো। সেই হিসেবে এ রাস্তার সমন্তরাল সীমানায় প্রথম থেকেই কোন সেতুর প্রয়োজনীয়তা ছিলো না বলে এখানকার মানুষেরা দাবি করছেন। বরং যেখানে সেতু হওয়ার কথা সেখানে সেতু হচ্ছে না। যেখানে সেতুর কোন প্রয়োজন নেই সেখানে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের লক্ষ্যে সেতু নির্মাণ দেখানো হচ্ছে। এ পথে সরকারিভাবে একাধিক পাইপ রয়েছে দুধারের পানি চলাচলের জন্য বর্ষার সময়ে। বর্ষার পানি নেমে গেলে এখানে কৃষি কাজ করা হয় জমিজমায়। সেই হিসেবে এখানে কেন সেতু নির্মাণ। কেন সরকারি টাকার অপচয়।
এখানকার এলাকাবাসীরা জানান, এখানে একদা ইটের রাস্তা ছিলো। সেই রাস্তা দিয়ে তারা বছরের পর বছর চলাচল করেছেন। তাদের কোন অসুবিধা হয়নি। পুরো রাস্তাতে কোন সেতুর প্রয়োজন নেই বলে তারা দাবি করেন।
এখানকার ওয়ার্ড মেম্বার বাচ্চু জানান, এ রাস্তার সেতুর কাজটি তিনি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান তাকে এ কাজটি দেননি বলে তিনি দাবি করেন। বর্তমানে এ সেতুর কাজ করছেন ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি আরো জানান, এ কাজে ৪১ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
আধারা ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল কবির মাস্টারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা কারা হলে তিনি তার ফোনটি রিসিভ করেননি।