নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিষ্পাপ শিশু রাসেল হত্যার বিচারের পথ রুদ্ধ করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে জিয়াউর রহমান ও তার দল বিএনপি। খুনিদের সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। ইতিহাসের পথ পরিক্রমায় শেখ রাসেল আজ বাংলার অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকার বঞ্চিত শিশুদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে গ্রাম-গঞ্জ-শহর তথা বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ জনপদ-লোকালয়ে এক মানবিক সত্ত্বায় পরিণত হয়েছে।
গতকাল রবিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মদিন উপলক্ষে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে খুনি ঘাতকচক্র বাঙালির স্বপ্ন-আকাক্সক্ষা এবং সম্ভাবনাকেও নস্যাৎ করার অপচেষ্টা চালায়। সেদিনের সেই নরপিশাচরা এতোটাই নিষ্ঠুর-নির্মম-হিংস্র ছিল যে নিষ্পাপ শিশু রাসেলকে হত্যা করতেও কোনো প্রকার কুণ্ঠাবোধ করেনি। এমনকি সেদিনের সংঘটিত হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী বেনিফিশিয়ারি গ্রুপ ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে জাতির পিতার হত্যার বিচার বন্ধের সাথে সাথে শিশু রাসেল হত্যার বিচারের পথও রুদ্ধ করেছিল। বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্রের হোতা জিয়াউর রহমান ও তার দল বিএনপি শিশু রাসেল হত্যার বিচারের পথ রুদ্ধ করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল।
তিনি বলেন, মা, বাবা, দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচা সবার লাশের পাশ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে নরপশু খুনির দল সবার শেষে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে রাসেলকে। ওই ছোট্ট বুকটা তখন ব্যথায় কষ্টে বেদনায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। যাদের সান্নিধ্যে স্নেহ-আদরে হেসে খেলে বড় হয়েছে তাদের নিথর দেহগুলো পড়ে থাকতে দেখে ওর মনের কী অবস্থা হয়েছিল- কী কষ্টই না ও পেয়েছিলÑ কেন কেন কেন আমার রাসেলকে এত কষ্ট দিয়ে কেড়ে নিল?
তিনি বলেন, নিষ্পাপ শিশু রাসেলের নির্বাক আঁখির সলিল-অশ্রুধারার মতোই এ প্রশ্নের কোনা উত্তর পাওয়া যায় না! শেখ রাসেলের নিষ্পাপ মুখশ্রী ও তার কাকুতি-মিনতি যে নিষ্ঠুর দুর্বৃত্তদের মন টলাতে পারেনি। মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাসেলের ছোট্ট বুক বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল যে হায়ানা, তারা পৃথিবীর সকল নিকৃষ্টতম পশুকেও হার মানাবে।
তিনি বলেন, শেখ রাসেল আজ বাংলার অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকার বঞ্চিত শিশুদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে গ্রাম-গঞ্জ-শহর তথা বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ জনপদ-লোকালয়ে এক মানবিক সত্ত্বায় পরিণত হয়েছে। মানবিক চেতনা সম্পন্ন মানুষরা শেখ রাসেলের বিয়োগ দুঃখ বেদনাকে হৃদয়ে ধারণ করে বাংলার প্রতিটি শিশু-কিশোর তরুণের মুখে হাসি ফুটাতে আজ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আল মাহমুদ বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শাহীন মোঃ আমানুল্লাহ সাধারন সম্পাদক মুন্সীগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতি, গোলাম মাওলা তপন সাবেক সভাপতি মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ, মোরশেদা বেগম লিপি আহ্বায়ক মুন্সীগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগ ও সদস্য মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ, মহসীনা হক কল্পনা চেয়ারম্যান মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ, আরিফুর রহমান সভাপতি মুন্সীগঞ্জ শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, সদস্য মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ, নার্গিস আক্তার সংরক্ষিত কাউন্সিলর মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা, মকবুল হোসেন কাউন্সিলর ৩নং ওয়ার্ড মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা ও সাধারণ সম্পাদক মুন্সীগঞ্জ শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাকির হোসেন কাউন্সিলর ৯নং ওয়ার্ড মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা, সজল আহমেদ মিতালি সভাপতি মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ, খাইরুল ইসলাম পলাশ সাধারণ সম্পাদক মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ, গোলাম রসুল সিরাজী রোমান সদস্য মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ, আবির হোসেন কাউন্সিলর ১নং ওয়ার্ড মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা, জাহিদ হাসান সভাপতি পঞ্চসার ইউনিয়ন যুবলীগ ও সদস্য পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদ, শহিদুল ঢালী সদস্য পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদ, আবুল কাশেম সভাপতি জাতীয় শ্রমিকলীগ মুন্সীগঞ্জ জেলা শিল্পায়ন আঞ্চলিক শাখা, বাদশা মিয়া সাধারণ সম্পাদক মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষক লীগ, হাসিব মোঃ রাফিউ ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ, মশিউর রহমান সিজু সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আল মাহমুদ বাবু সভাপতি মুন্সীগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সঞ্চালনা করেন মনিরুজ্জামান শরিফ সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সেকান্দর হোসেন সভাপতি মীরকাদিম পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ।