বাস ভাড়া দ্বিগুণ ॥ লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী॥ যাত্রী দূর্ভোগ চরমে
মাসুদ রানা ॥ পবিত্র ঈদ-উল-আজহার টানা নয়দিন ছুটি শেষে গতকাল শনিবার শিমুলিয়াঘাটে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের ঢল পড়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার যাত্রীরা কয়েক দিন আগে থেকেই শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌ-রুটের পদ্মা পাড়ি দিয়ে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে হাজারও যাত্রী। আর এসব কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ঢল গতকাল শনিবার সকাল থেকে বাড়তে শুরু করে। কিন্তু গতকাল সকাল থেকে শিমুলিয়াঘাটে হাজারও যাত্রীর ঢল পড়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, ঢাকামুখী যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ সামাল দেওয়ার জন্য শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌ-রুটে রো-রো, কে-টাইপ, মিডিয়াম, ড্রাম ও ছোটসহ মোট ১৮টি ফেরি বিরামহীনভাবে চলাচল করছে। এছাড়াও ৮৭টি লঞ্চ ও প্রায় ৩শতাধিক স্পীডবোট যাত্রী পারাপারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। সরেজমিনে শিমুলিয়াঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এ-নৌ-রুটের লঞ্চগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া ও অতিরিক্ত যাত্রীবহন করে লঞ্চগুলো ঘাটে এসে ভিড়ছে। এসব যাত্রীরা নৌ-যান থেকে নেমে শিমুলিয়া বাস টার্মিনালে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে রয়েছে বাসের জন্য। হাজার হাজার যাত্রীদের ঢল দেখে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের এক শ্রেনীর অসাধু বাস মালিকরা এ-রুটের নির্ধারিত ভাড়া ৭০ টাকা থেকে ১০০ টাকা করে দেওয়া সত্ত্বেও দ্বিগুণ ২০০ টাকা করে নিচ্ছে। দীর্ঘ লাইন ধরে টিকেট নিতে হচ্ছে ২০০ টাকা দিয়ে। এতে দুর্ভোগে পড়ছে হাজার যাত্রী।
মাদারীপুর থেকে বংশাল যাচ্ছিল আরিফ বেপারী (৪৭) নামের এক যাত্রী তিনি জানান, প্রতি বছর এ ঘাট দিয়ে যাতায়াত করি। বাড়তি ভাড়া শিমুলিয়াঘাটে কোন নতুন কথা নয়। আমি বাড়তি ভাড়া অনেকবার দিয়েছি। আজ ২০০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটেছি। যে ভাড়া ৭০ টাকা। সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ এ বাড়তি ভাড়া নেওয়া প্রসঙ্গে। এদিকে জাজিরার সেলিমা খাতুন নামের এক যুবতি জানান, মাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাচ্ছি। এতো ভিড়ের মাঝে বাড়তি ভাড়া দেওয়াটা সব পরিবারের পক্ষে সম্ভবনা। আমি অল্প টাকা নিয়ে মায়ের চিকিৎসা করাতে যাচ্ছি এর মধ্যে বাড়তি ভাড়া দেওয়াটা আমার পক্ষে সম্ভবনা।
এদিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে কয়েকদিন লৌহজং উপজেলা প্রশাসনের উদ্দ্যেগে ঘাটে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট বেশকটি পরিবহনকে জরিমানা করেন এবং যাত্রীদের থেকে নেওয়া অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত দিতে বাধ্য করলেও কিছুতেই যেন কমছেনা শিমুলিয়াবাস টার্মিনালে পরিবহন নৈরাজ্য। বরং এ-রুটের বেশকটি পরিবহন এক প্রকার ডাকঢোল পিটিয়েই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন। যাত্রীরা আরও জানান, বাড়তি ভাড়া না দিতে বলে বাস ছাড়বে না আমরা বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া দিচ্ছি। উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট বাড়তি ভাড়া বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলেও চোখের সামনে থাকা ট্রাফিক পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে জানান যাত্রীরা। কোন কোন পরিবহন মিরপুর ও গাবতলী যাওয়ার অজুহাতে যাত্রীদের থেকে পুলিশের উপস্থিতিতেই ২০০ টাকা করে ভাড়া কাটছে। অথচ ঈদের পূর্বে শিমুলিয়াঘাটে লৌহজং উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সকলের সামনে বাস মালিকরা বলেন জনপ্রতি ১০০ টাকার বেশি তারা ভাড়া কাটবেনা। অপরদিকে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীরা নিয়ে কাঁঠালবাড়িঘাট থেকে পাড়ি দিচ্ছে। ফলে এ নৌ-রুটের যাত্রী দূর্ভোগ চরমে।
ঈদ যাত্রা শেষে শিমুলিয়াঘাটে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের ঢল
আগের পোস্ট