নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, এদেশের শান্তিকামী গণতন্ত্রকামী মানুষ একুশে আগস্টের খুনিদের আর রাজনীতির মঞ্চে দেখতে চায় না। ১৫ই আগস্টের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ ও ২১ আগস্টের নারকীয় হত্যাকান্ডের কুশিলব এবং বেনিফিসিয়ারি জিয়া পরিবার ও বিএনপি। একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে উন্নত-সমৃদ্ধ কল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে হলে একুশে আগস্টের মাস্টারমাইন্ড পলাতক তারেক রহমান ও বিএনপি-জামাতকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠাতে হবে।
গতকাল রবিবার ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে মুন্সীগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ আগস্ট একটি নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের ভয়াল দিন। তৎকালীন বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সরকারের শীর্ষপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের ষড়যন্ত্রে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা চালায় সন্ত্রাসীগোষ্ঠী।
তিনি বলেন, জনসমক্ষে আজ দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশ, পৃষ্ঠপোষকতা, আশ্রয় ও প্রশ্রয়েই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিলো। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামীদের জবানবন্দিতে উঠে আসে কীভাবে সন্ত্রাসের মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমান ও বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গ্রেনেড হামলা সংঘটিত হয়েছিল। তারেক রহমানের ষড়যন্ত্রে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হারিছ চৌধুরী, আবদুস সালামসহ বিএনপি-জামাতের শীর্ষ নেতা এবং মুফতি হান্নানসহ শীর্ষ জঙ্গি নেতাদের বৈঠকে গ্রেনেড হামলার চূড়ান্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটিকে আমি প্রথা সিদ্ধ রাজনৈতিক দল মনে করি না। এটা দুর্বৃত্তায়নের একটি প্ল্যাটফর্ম। এদেশে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের রাজনীতির প্রবর্তক জিয়াউর রহমান। তার পরিবারের সদস্যরাও সেই নষ্ট রাজনীতির প্রতিপালন করে চলেছে। রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে বিরোধী রাজনৈতিক সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে এ ধরনের গণহত্যা সংঘটিত হতে পারে তা কোন সভ্য মানুষ কল্পনাও করতে পারে না। অথচ বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সেই কাজটিই ২১ আগস্টে সংঘটিত করেছিল।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির ইতিহাসে এমন বর্বরোচিত হত্যাকান্ড ঘটেনি। গ্রেনেড মেরে একটি রাজনৈতিক শক্তির মূল নেতৃত্ব সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার এমন জিঘাংসামূলক রাজনীতির ঘটনা সমকালীন বিশ্বে আর ঘটেনি। কেউ কী কোনোদিন ভাবতে পেরেছে, এই দেশে একটি দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে দেশের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের মতো একটি রাজনৈতিক শক্তিকে পেশাদার খুনিদের দিয়ে গ্রেনেড মেরে সমূলে বিনাশ করবে? মূলতঃ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল বাংলাদেশের একটি রাষ্ট্রীয় পাপ। আর পাপী ছিলেন তৎকালীন বিএনপি জোট সরকার আর জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তার সরকারের নিয়ন্ত্রক তারেক জিয়া।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ তাজুল ইসলাম পিন্টুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মুন্সীগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দীন কল্লোল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. সালমা হাই টুনি, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ শ্যামল গোস্বামী, কার্যকরী সদস্য ফয়সাল আহম্মেদ, নজরুল ইসলাম মুন্সী, পৌর কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, নার্গিস আক্তার, জেলা কৃষক লীগ সভাপতি মহাসীন মাখন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুন খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এ্যাড. কাওছার তালুকদার, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম পলাশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবু সাঈদ বিন্দু প্রমুখ।