নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ই এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এক বিবৃতিতে- মুজিবনগর সরকার তথা বাংলাদেশের প্রথম সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এম মনসুর আলী, স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও কৃষিমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান, মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল সংগঠক, মুজিবনগর সরকারের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লক্ষ শহীদ, নির্যাতিত দুই লক্ষ মা-বোন এবং মহান মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিবেদনকারী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানসহ সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
বাণীতে মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ১৭ই এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সুদীর্ঘ ইতিহাসে চিরভাস্বর এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে কুষ্টিয়া জেলার তদানীন্তন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথ তলার আম্রকাননে স্বাধীন-সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। এ অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয় ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বৈদ্যনাথতলা গ্রামের নামকরণ হয় মুজিবনগর। মুজিবনগর সরকারের কর্মকান্ড বাংলাদেশ ভূখন্ডের বাইরে থেকে পরিচালিত হয়েছিল বলে এ সরকার প্রবাসী মুজিবনগর সরকার হিসেবেও খ্যাত।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির উপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সর্বস্তরের জনগণ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। যার ধারাবাহিকতায় ১০ই এপ্রিল মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকার মুক্তাঞ্চলে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এক বিশেষ অধিবেশনে মিলিত হন এবং স্বাধীন-সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করেন। এই অধিবেশনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদন করা হয় এবং ১৭ই এপ্রিল মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে এই সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বেই দীর্ঘ পরিচালিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে সংগঠিত স্বাধীনতা সংগ্রামের পথ-পরিক্রমায় এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মুজিবনগর সরকারের অধীনে পরিচালিত দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন-সাধ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে একটি উন্নত সমৃদ্ধ কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।