আন্তর্জাতিক ডেস্ক
করোনাভাইরাস মহামারিতে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। পৃথিবীর বাইরে মহাকাশ কেন্দ্রেও এই ভাইরাসের আতঙ্ক দেখা গেছে। তবে পৃথিবীতে থেকেও দুই জন করোনা নামের ভাইরাসের কথা এতদিন জানতেন না। এই অদৃশ্য শত্রু যে এভাবে বিশ্বকে বন্দি করে ফেলেছে তাও তাদের ছিল অজানা।
এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, একঘেয়ে জীবনে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন দুজনে। অফিস আর বাড়ি। এই বাধা গণ্ডিতে থাকতে দম বন্ধ হয়ে আসছিল দুজনের। তাই একদিন ঠিক করলেন, এবার চাকরি ছেড়ে বিশ্বভ্রমণে বেড়িয়ে পড়বেন দুজনে মিলে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ।
যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা রায়ান ওসবার্ন ও এলিনা ম্যানিহেটি স্বামী -স্ত্রী। দুজনেই ঘুরতে ভালবাসেন। তাই বাধাধরা জীবনে তাদের মন টেকে না। তাই ছোট নৌকা নিয়ে দুজনে বিশ্বভ্রমণে বেরোন। কিন্তু এর মধ্যে যে এত কিছু হয়ে গিয়েছে তা তারা কেউই টের পাননি। ফলে করোনাভাইরাসের পুরো ঘটনা শুনে দুজনে থ। এতদিন ধরে তারা জানতেনই না, করোনা নামের কোনো এক ভাইরাস গোটা দুনিয়ায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। তারা দুজন ছিলেন নিজেদের মতো।
ম্যানচেস্টারের বাসিন্দা রায়ান ও এলিনা ক্যারিবিয়ান দ্বীপের একটি ছোট্ট বন্দরে তাদের নৌকো ভিড়িয়ে সব জানতে পারেন। ভ্রমণের সময় তারা কেউই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। ঘুরতে ঘুরতে তারা কোনো খারাপ সংবাদ শুনতে চান না, সেই জন্য পরিবারের লোকজনকেও বলেছিলেন যোগাযোগ না রাখতে। আর তা এতগুলো দিন করোনার প্রকোপ সম্পর্কে তারা কিছুই জানতে পারেননি। ফেব্রুয়ারি মাসে দুজনে বিশ্বভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। তারপর থেকে দুজনে ছিলেন গোটা দুনিয়া থেকে আলাদা। বিশ্বের কোনো খবরই তারা রাখেননি!
এলিনা ইতালির লম্বার্ডি অঞ্চলের মানুষ। ওই অঞ্চলে করোনার প্রকোপ সব থেকে বেশি ছিল। ইলিনা বলছিলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা আটলান্টিক মহাসাগর থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম। ক্যানারি থেকে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দিকে যাত্রা করব বলে একটি নৌকা কিনেছিলাম। করোনাভাইরাস সম্পর্কে সেই সময় খুব একটা জানতাম না।
তিনি জানান, শুনেছিলাম, চীনে একটি ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে। এটাও শুনেছিলাম, ওই ভাইরাসের প্রকোপ মাসখানেকের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। তবে এই বন্দরে এসে জানতে পারি, ওটার প্রকোপ শেষ হয়নি। সারা বিশ্ব তছনছ করে দিয়েছে এই ভাইরাস। ২০১৭ সালে দুজনে মিলে চাকরি ছেড়ে বিশ্বভ্রমণে বেরনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এলিনা ও রায়ান।