কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু : দীর্ঘ ২৩ বছর পর মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চাঞ্চল্যকর আবুল কাশেম হত্যা মামলার ১০ আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ৪ মাসের কারাদন্ডের রায় দেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক ড. মোঃ আলমগীর এ রায় দিয়েছেন। এছাড়া রায়ে অপর ৫ আসামীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ আলী হায়দার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রায় ঘোষণার সময় ৭ জন আসামী হাজির থাকায় তাদের কারাগারে প্রেরণ এবং পলাতক তিন আসামীর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন আদালত।
যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন- নাছিরউল্লাহ নাছির, মোশারফ হোসেন, রিপন মিয়া, রাজ্জাক, আক্কাস আলী, দেলোয়ার হোসেন, শাহ আলম, আলম, হবি ও শফিকুল ইসলাম শফিক।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালের ৭ জুন রাতে গজারিয়ার চরবাউশিয়া গ্রামের জজ মিয়ার বাড়ির উত্তর পাশে ধান ক্ষেতে আবুল কাশেমের লাশ পড়ে থাকার তথ্য জানায় শান্তি বেগমসহ কয়েকজন। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় আবুল কাশেমের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী রিপন মিয়া গ্রামের শান্তি বেগম, জজ মিয়া ও জয়নালকে আসামী করে গজারিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে সন্দেহ হওয়ায় মোশারফ, রাজ্জাক, শাহ আলম ও শফিকুল নামের ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। আসামীদের জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে পুলিশ পর্যায়ক্রমে অপর আসামীদের গ্রেপ্তারে সক্ষম হয়। ওই মামলায় বিচার আদালতে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করে দীর্ঘ ২৩ বছর পর মামলার ১০ আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আরিফ হোসেন জানান, দীর্ঘ ২৩ বছর পর বিচারকার্য সম্পন্ন হওয়ার পর আদালত গজারিয়ায় চাঞ্চল্যকর আবুল কাশেম হত্যা মামলার ১৫ আসামীর মধ্যে ১০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড রায় দিয়েছেন। অপর ৫ জনের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। আদালতের রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।