নিজস্ব প্রতিবেদক
গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের ছোট রায়পাড়া খাল দখল করে গড়ে তুলেছে শিল্প প্রতিষ্ঠান। খাল দখলের সঙ্গে জেলা ছাত্রদলের নেতা, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও এলাকার প্রভাবশালীর নাম উঠে এসেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়নের ছোট রায়পাড়া গ্রামের পূর্ব-দক্ষিণে কাজলী নদী হইতে মেঘনা নদীর সংযোগ এ খালটি ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নের ফলে ক্রমশ অবৈধভাবে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। একসময় স্থানীয় লোকজন মাছের চাহিদা পূরণ করতো এ খাল থেকে। দখলের কারণে এ খালের সঙ্গে যুক্ত জমিগুলোতে জলাবদ্ধ হওয়া নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত মঙ্গলবার সকালে বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের ছোট রায়পাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট রায়পাড়া খাল দখল করে গড়ে তুলেছেন পি টি কনজ্যুমার, সান রাইজ প্লাস্টিক, হেলথ কেয়ার এগ্রো এন্ড কেমিকেল লিঃ, ইকো ফুড কালার এন্ড এরোমা কোম্পানী। পর্যায়ক্রমে খাল দখল করছে একই গ্রামের মৃত আনসার আলীর ছেলে মজিবর রহমান। খালটির একমুখ ভরাটের ফলে পানিপ্রবাহ কমে গেছে। ফলে এই মৌজার বিলে সেচ ও পানি নিষ্কাশনে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, জেলা ছাত্রদলের নেতা ও ছোট রায়পাড়া গ্রামের মোঃ সানাউল্লাহ মিয়ার ছেলে উল্লেখিত কোম্পানী মালিক মোজাম্মেল হক মুন্না, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা ও ইউপি সদস্য মো. মুক্তার হোসেন ও মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসী জানায়, ছোট রায়পাড়া খাল দখল হয়ে যাওয়ায় আগামী কয়েক বছরের মধ্যে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী। জরুরি ভিত্তিতে খালটি পুনরুদ্ধার করে খননের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তারা। অবৈধভাবে খাল দখলদারদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান জুয়েল সরকার জানান, বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেখানে খাল খনন করছেন সেখানে যত প্রভাবশালী হোক তাদেরকে খাল ভরাট করতে দেওয়া হবে না। গজারিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, খাল দখলের খবর পাওয়ার পর তার অফিস থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন তিনি। সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিকভাবে খাল ভরাট এর সত্যতা পাওয়ায় ড্রেজার আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। আগামী দু’একদিনের মধ্যে তাদেরকে জমির যথাযথ কাগজপত্র নিয়ে তার দপ্তরে আসতে বলা হয়েছে। যদি তারা প্রমাণ করতে পারে জমি তাদের তবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বাধা নেই। আর যদি তারা না পারে তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।