নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে কোরবানির পশু হিসেবে গরুর চাহিদা থাকায় বেড়েছে গবাদি পশু পালন। দেশের অনেক গ্রামীণ জনপদের বাড়িগুলোতে একটি দু’টি করে গরু পালন করা স্বাভাবিক বিষয়। কোরবানী উপলক্ষ্যে প্রতিবছরই তারা এসব গরু বিক্রির জন্য মোটাতাজা করেন ভালো দাম পাওয়ার আশায়। কিন্তু আমাদের গজারিয়ায় এই খামার তেমন একটা দেখা যায় না। ব্যাতিক্রম উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের চরচাষী গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ আলী আহম্মেদ। তিনি ভাল লাগা থেকেই শখের বশে গড়ে তুলেছেন গরু ও মহিষের খামার। যার নাম দিয়েছেন গ্রীণ ট্রেডিং এন্ড এগ্রো ফার্ম। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পুরাতন চরচাষী গ্রামে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় দুই বিঘা জমির উপর তিনি গড়ে তুলেছেন এই খামার। অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। যেখানে রয়েছে আলো-বাতাসের ব্যবস্থা। সেখানে শতাধিক গরু-মহিষ মোটাতাজা করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে খামারীরা সারাবছরই পশু হিসেবে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া লালনপালন করে থাকে। এতে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেন। এ বিষয়ে মোঃ আলী আহম্মেদ বলেন, গরু মোটাতাজা করা লাভজনক কাজ হলেও মূলত আমি শখের বশে এই খামার করেছি। কুমিল্লায় বেড়াতে গিয়ে গরু লালন-পালন ও মোটাতাজাকরণ বিষয়টা দেখেছি। তারপরই পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা করে ৪০টি গরু ও ৪০টি মহিষ নিয়ে বাড়ির সামনেই এই খামারটি করেছি। এখানে দেশীজাতের গরু ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ান ও ফ্রিজিয়ান জাতের গরু রয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন একটা গরুর পেছনে ৩০০-৩৫০ টাকার শুধু খাবারই দিতে হয়। যখন গরু কিনেছিলাম তখন বাজার চড়া ছিল। আর ইতিমধ্যে গরু মোটা হয়ে গেছে। এখন আর খাওয়ালেও মোটা হবে না। এই মুহূর্তে আমার খামারে দুই-চার লক্ষ টাকা দামের বিক্রয়যোগ্য গরু আছে। খামারে কর্মরত সাত শ্রমিকের একজন শহীদুল জানান, ধানের খড় (বিচালী), খৈল, গমের ভুষি, খুদ, ছোলা, ভুট্টা, ডাল, ধান ভাঙানো কুঁড়া, ঘাস ইত্যাদি খাইয়ে গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আসাদুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে গজারিয়া উপজেলায় খামারীরা কোরবানির জন্য গরু মোটাতাজা করা শুরু করেছেন। আমরা সেই বিভিন্ন খামার পরিদর্শন ও তালিকা প্রণয়ন করছি। অনেকে ছাগল ও ভেড়া পালন করছেন। করোনার কারণে কৃষক ও খামারীরা গবাদি পশুর অতিরিক্ত যত্ন নিয়েছে। এ বছর গবাদি পশুর রোগবালাই তুলনামূলক কম। আমরা করোনার মধ্যেও খামারিদের খোঁজখবর নিয়ে তাদের পরামর্শ ও পশুদের চিকিৎসা দিয়েছি। আমরা খামারীদের হরমোন জাতীয় খাবার পশুকে না খাওয়ানোর জন্য নিরুৎসাহিত করছি।