নিজস্ব প্রতিবেদক
গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দী ইউনিয়নের জামালদী বাসস্ট্যান্ড-মেঘনা ঘাট বাজার সড়ক স্থায়ীভাবে বন্ধের পথে। অথচ এই রাস্তা খুলে দেওয়ার বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি ছিল।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার জামালদী বাসস্ট্যান্ড-মেঘনা ঘাট বাজার সড়কের মাঝামাঝি স্থানে বাজারের দক্ষিণ পশ্চিম কোনায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য আরসিসি পিলারের নির্মাণ কাজ চলমান। এখানে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজ শেষ হলে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়কটি।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২য় মেঘনা ব্রীজ নির্মাণ কাজ শুরুর সময় জাপানী প্রকৌশলী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার অজুহাতে সেসময় বন্ধ করা হয় এই সড়কটির মুখ। সেসময়ও স্থানীয়রা আন্দোলন করেছিল কিন্তু তখন স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতি ছিল বিদেশী মেহমানরা কাজ শেষে চলে যাওয়ার পর এই রাস্তা খুলে দিবে। তাদের সেই প্রতিশ্রুতিতে তখন শান্ত থেকে জাতীয় স্বার্থে ব্রীজ নির্মাণ কাজে সহযোগিতা করেছিল। দীর্ঘ ৪ বছর আশেপাশের তিন ইউনিয়নের ১৫/১৬টি গ্রামের ২০/২৫ হাজার মানুষ প্রায় দুই আড়াই কিলোমিটার পথ ঘুরে মেঘনা বাজারে যাতায়াত করতো। যা ছিল অত্যন্ত কষ্টকর। গত দুই বছর যাবৎ ২য় মেঘনা ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। রাস্তাটি খুলে দেওয়ার দাবিতে ইতিমধ্যে স্থানীয়রা মিছিল, মিটিং, মানববন্ধন, সমাবেশ করেছে যা স্থানীয় ও জাতীয় একাধিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু টনক নড়েনি সড়ক ও জনপথের। সময়ের পরিক্রমায় গত একবছর যাবৎ সেই সময়ের নির্মাণ করা টিনের প্রাচীর খুলে যায় এবং স্থানীয় মানুষ এই পথ দিয়ে যাতায়াত শুরু করে। এতে তারা খুব খুশি ও আনন্দিত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে স্থায়ীভাবে এই সড়কটি বন্ধের পাঁয়তারা করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিকভাবে শত চেষ্টার পরেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় চিরতরে রাস্তাটি বন্ধের পথে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, সাধারণ জনগণের দীর্ঘদিনের আন্দোলন, চাওয়া পাওয়াকে উপেক্ষা করে রাস্তাটি কার স্বার্থে বন্ধ করতে চান সরকার। স্থানীয় প্রশাসনের দৃশ্যমান তদারকি দেখতে চায় এই এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
গজারিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ আরফিন বলেন, দীর্ঘদিন এই সড়কটি স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের মানুষদের যাতায়াতের একমাত্র পথ ছিল। সরকারের উচিত সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে সড়কটি উন্মুক্ত রাখা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সড়কটি বন্ধ করার সময় আমার পূর্বসূরি অফিসাররা স্থানীয় মানুষদের কথা দিয়েছিলেন রাস্তাটি উন্মুুক্ত করে দিবেন। আমি নিজেও রাস্তাটি খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।
এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করি। মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকি। তাই মানুষ আমাদের কথা শোনেন। কিন্তু এই মুহুর্তে কষ্ট পাচ্ছি, হতাশা বোধ করছি। সেইসময় মেঘনা ২য় ব্রীজ নির্মাণের সময় বিদেশী ইঞ্জিনিয়ার, শ্রমিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা স্থানীয় জনসাধারণকে বুঝিয়ে সড়কটি বন্ধ করার ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু এই মুহুর্তে যেভাবে দেয়াল নির্মাণ করে সড়কটি বন্ধ করার পায়তারা করছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারের উচিত বিষয়টি ভেবে দেখা।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ বিভাগের ভিটিকান্দী উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ গোলাম ফারুক বলেন, এটা আমাদের বিষয় না। এখানে কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরি স্থাপিত হবে তাই দেয়াল করা হচ্ছে। এখানে কোন সড়ক থাকবে না। আমরা অচিরেই মেঘনা ঘাট বাজার উচ্ছেদে নোটিশ দিব এবং উচ্ছেদ করবো।
গজারিয়ায় জামালদী বাসস্ট্যান্ড-মেঘনা ঘাট বাজার সড়ক স্থায়ীভাবে বন্ধের পথে
আগের পোস্ট