আমিরুল ইসলাম নয়ন : মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে দুই দল শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতরা হলেন- তাহিন (১৬), জোবায়ের (১৫), আব্দুল্লাহ (১৬) ও ফাইজুল ইসলাম (১৭)।
গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার টেঙ্গারচর ইউনিয়নের ভাটেরচর দেওয়ান আব্দুল মান্নান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও হামলায় আহত শিক্ষার্থী তাহিন বলেন, আমি বিদ্যালয়টির নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। রোববার সকালে আমি শ্রেণিকক্ষে এসে বেঞ্চের উপর ঘুমিয়ে পড়ি। ওই সময় সাঈদ নামে এক শিক্ষার্থী আমাকে ডাকাডাকি করতে থাকে। আমি তার কাছে ডাকাডাকির কারণ জানতে চাইলে তার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয় এবং সে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এ ঘটনার জের ধরে আজ (গতকাল) সোমবার সকাল ১০টার দিকে সাঈদ, হাসান, ইমন ও বহিরাগত পাভেলসহ কয়েকজন আমার উপর হামলা করে। সাঈদের হাতে হকিস্টিক ছিল। সে হকিস্টিক দিয়ে আমাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আমার মাথা ফেটে যায়। এসময় আমার বন্ধুরা আমাকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। পরবর্তীতে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
অপর আহত শিক্ষার্থী জুবায়ের বলেন, আমি আমার বন্ধু তাহিনকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা আমার উপর চড়াও হয়। এসময় তারা হকিস্টিক দিয়ে আমাকে আঘাত করে। এতে আমার মুখের উপরের পাটির চারটি দাঁত পড়ে যায়।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ খন্দকার আরশাদ কবির বলেন, এ ঘটনায় আহত চারজন শিক্ষার্থী আমাদের হাসপাতালে এসেছিল। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে দু’জনের মাথায় আঘাত রয়েছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শাজাহান সিকদার বলেন, আমরা এসএসসি পরীক্ষার হলে ছিলাম। সোমবার স্কুলে মাত্র তিনজন শিক্ষক ছিল। শুনলাম সালাম দেওয়াকে কেন্দ্র করে অষ্টম এবং নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি আমাদের শিক্ষকরা সমাধান করে দিয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের সামনে এসে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে। আনারপুরা ও বড়ইকান্দি ভাটেরচর গ্রামের লোকজন মারামারিতে লিপ্ত হয়।
গজারিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনাদের কাছে প্রথম জানলাম। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার মোঃ আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, এ বিষয়ে আহত শিক্ষার্থী তাহিনের মা জেসমিন বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।