নিজস্ব প্রতিবেদক
গজারিয়া উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন বাউশিয়া এলাকায় ম্যাগনিয়াম ষ্টীল এর কার্বন মিশ্রিত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণের অভিযোগ উঠেছে। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন এ ফ্যাক্টরির কালো ধোঁয়ার আশেপাশের এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন। কখনো কখনো এই ধোঁয়া মহাসড়ককে আচ্ছন্ন করে ফেলে। অতিরিক্ত কার্বন মিশ্রিত ধোঁয়া এ পথ দিয়ে চলাচলরত সাধারন জনসাধারনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও এ ফ্যাক্টরীর আশেপাশে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফায়ার সার্ভিস, গজারিয়া থানা, ভবেরচর ফাঁড়ি থানা, একাধিক রেস্টুরেন্ট এবং বিপনী বিতান ও বাড়িঘর। কারখানার পাশে বাড়ির মালিক আব্দুর রশিদ বলেন, অনেকবার সাংবাদিক, থানা পুলিশের কাছে বলা হয়েছে। ধোঁয়া বন্ধের কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ধোঁয়া আমাদের অনেক ক্ষতি করছে। আম, জাম, পেঁপে গাছে ফল ভালো হচ্ছে না। সকাল-সন্ধ্যায় ঘর থেকে বের হতে পারছি না। রবিউল আওয়াল নামে আরেকজন বলেন, শিল্প-কারখানা হতে দুইশত গজের মধ্যে আমার বাড়ি। ধোঁয়ার কারণে কিছু দেখা যায় না। ফলজ গাছের ফল ঝরে পড়ছে, সবজি গাছে ফুল আসার পর ঝরে পড়ছে। কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া বন্ধের কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না, আমরা কি করতে পারি? এ পথে চলাচলরত পথচারী মানিক বলেন, কারখানার ধোঁয়ায় চলাচল করতেও কষ্ট হয়। চোখ জ্বলে অন্ধকার হয়ে যায় এলাকা। এ বিষয়ে বাউশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোস্তফা সারোয়ার বিপ্লব বলেন, ম্যাগনিয়াম ষ্টীলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন ও লেখালেখি করে আসছি। কিন্তু কোন সমাধান পাচ্ছি না। অথচ এ পথে চলাফেরা করলেই চোখ জ্বালাপোড়া করে। কাশি হয়, শ্বাসকষ্ট হয়। ঘরে থাকতে পারিনা । এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মেডিকেল অফিসার ডাঃ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, কার্বন মিশ্রিত ধোঁয়া স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে অ্যাজমা, ফুসফুসের রোগ সহায়ক, ক্যান্সার রোগসহ পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলে। পশু-পাখি, গাছপালা, ফল-ফলাদি, সবজি নষ্ট করে। ধোঁয়া নিঃসরণ শিল্প-কারখানার ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। আবাসিক এলাকায় এই জাতীয় শিল্প কারখানা থাকা উচিত নয়। গজারিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি জেলা ও উপজেলা উন্নয়ন সভায় আলোচনা করেছি। ধোঁয়া বন্ধে রেজুলেশনও করা হয়েছে। কিন্তু যখন এ বিষয়ে জনমত গড়ে উঠেছে তখন তারা প্রভাবশালী মহলের কাছে মালিকানা হস্তান্তর করে ফেলেছে। এই জাতীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান এলাকার মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ম্যাগনিয়াম ষ্টীলের জেনারেল ম্যানেজার দেব বাবু উপস্থিত থেকেও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অনিচ্ছা পোষণ করেন। ফ্যাক্টরির নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, কারখানার মালিক না থাকায় কথা বলার সুযোগ নেই।