নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। সর্বশেষ করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রান্ত আপডেট হিসাব অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৪ জন। মোট আক্রান্ত ৪১৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু নেই। মোট মৃত্যু ৩ জন। মোট সুস্থ ৪০৪ জন। আপডেট দেখে বোঝা যায়, দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা, মুখে মাস্ক পরার অভ্যাস পর্যন্ত নেই অনেকের মধ্যে। সারা দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আবার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। আশঙ্কাজনক হারে বারছে সংক্রমণ। দেশের ৩১টি উচ্চ সংক্রমিত জেলার ২য় অবস্থানে মুন্সীগঞ্জ। ইতিমধ্যে সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করাসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। সেখানে বলা হয়, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। সব পক্ষ থেকেই বলা হচ্ছে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করতে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ মানছে না অপরিহার্য স্বাস্থ্যবিধি। জনসাধারণের মধ্যে নেই ন্যূনতম সচেতনতা। সরেজমিনে ঘুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালেও মাস্ক ব্যবহারে উদাসীনতা, চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগী ও স্বজন মাস্ক ব্যবহার করছে না। অনেকের পকেটে মাস্ক থাকলেও ব্যবহার করছে না। আবার কেউ কেউ ঝুলিয়ে রাখছে থুতনিতে। কারো কারো সঙ্গে মাস্কই নেই। হাসপাতালের প্রবেশ পথেই দেখা গেল ১৫-২০ জনের জটলা। কিন্তু এদের বেশিরভাগের মুখে নেই মাস্ক। তবে চিকিৎসকদের কক্ষে প্রবেশের আগে অনেকে পকেট বা ব্যাগ থেকে মাস্ক বের করে পরে নিচ্ছে। অনেককে মাস্ক ছাড়াই প্রবেশ করতে দেখা গেছে। বাসস্ট্যান্ড, মার্কেট, চা দোকানে কোথাও দেখা যায়নি স্বাস্থ্য সচেতনতা। ভবেরচর, জামালদী বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, পথচারীদের মুখে মাস্ক তো নাই’ই বাসে চলাচলরত যাত্রীদের অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। দাউদকান্দি টু মোগড়াপাড়ায় চলাচলকারী মিনিবাসগুলোতে মানা হচ্ছে না সরকারের নিয়ম-নীতি। আগের মত যাত্রী বহন করছেন। মাস্ক কেন নাই জানতে চাইলে একজন যাত্রী বলেন, ‘বেশি সময় মাস্ক মুখে রাখতে পারি না। দম বন্ধ হয়ে আসে। তাই খুলে রেখেছি।’
মাস্ক মুখে না পরে কানে ঝুলিয়ে রাখছেন কেন জিজ্ঞাসা করলে বয়স্ক এক যাত্রী বলেন, ‘সারাদিনই বাইরে থাকতে হয়। সবসময় মাস্ক মুখে রাখতে ভালো লাগে না। এ কারণে বাসে উঠে একটু খুলে রাখলাম। চায়ের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। মাস্ক ব্যবহার বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বালাই নেই কারো। চায়ের দোকানে বসে থাকা কারো মুখে নেই মাস্ক। একই গ্লাসে পানি খাচ্ছে বহু মানুষ। দোকানে বসার ক্ষেত্রেও নেই ন্যূনতম দূরত্ব। চা দোকানী নজরুলের মুখে মাস্ক নাই কেন জানতে চাইলে সে সাথে সাথে ভিতর থেকে খুঁজে বাহির করে মাস্ক পরে। উপজেলার মার্কেট আর কাঁচা বাজারগুলোতেও ঘুরে একই অবস্থা দেখা গেছে। গত দু’দিন আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার মাহে আলম তার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আজ যে কয়েকজন রোগী দেখলাম সবই প্রায় জ্বর, ঠান্ডা, কাশি নিয়ে আসছে। কেউ কেউ শ্বাসকষ্টের কথাও বলছে। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। সার্বিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোবাশ্বির বিনতে আলম করোনা আপডেটের সততা স্বীকার করে বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ নাই।