নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কের একপাশ ও মেঘনা নদীর পাড় দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চার প্রভাবশালী এ স্থাপনা নির্মাণ করছেন যার যার মতো করে। দেখে মনে হয় যেন দেখার কেউ নেই। গত শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদীর তীরে মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া ফেরিঘাট রাস্তার মোড়ের দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ করছেন শ্রমিকরা। মূল সড়কের মধ্যে ওই স্থাপনার নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে। স্থাপনার পাশে বসেই নির্মাণ কাজের তদারকি করছেন প্রভাবশালী মোজাম্মেল হক, আমির হামজা ও ইব্রাহিম।
জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়ার এ পথটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মুন্সীগঞ্জ- গজারিয়া-কুমিল্লা হয়ে চট্টগ্রামসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কমপক্ষে ২০ জেলায় যাতায়াত করা যাবে। এ লক্ষে প্রায় দুই বছর আগে এ পথে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছিল। সরু ও খানাখন্দে ভরা রাস্তার কারণে যানবাহন চলাচল করতে পারছিল না। এর ফলে এক বছর আগে সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়। এতে করে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় নদীর সীমানা ও ফেরিঘাট এলাকার রাস্তায় প্রভাব খাটিয়ে এই নির্মাণ কাজ করছেন চরকিশোরগঞ্জ এলাকার প্রভাবশালী নজরুল ইসলাম, আমির হামজা, মোজাম্মেল, ইব্রাহিম। তাদের ভয়ে কেউ কিছু বলেনা। নিজেদের জায়গা বলে মিথ্যে প্রচার করছে। তাদের কোন কাগজপত্র নেই। একবার এখানে স্থাপনা নির্মাণ হয়ে গেলে ঘাটের রাস্তা সরু হয়ে যাবে। বড় যানবাহন মোড় ঘুরতে পারবেনা। এ পথে চলাচলকারী মিরাজ হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, যে স্থানে স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে এটি খাস। নদীর সীমানার মধ্যে পড়েছে। ঘাটটি মুন্সীগঞ্জের দুই উপজেলার মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা নিয়মিত এদিক দিয়ে যাতায়াত করি। এখানে স্থাপনা নির্মাণ হলে ফেরি চলাচল অবস্থায় বড় গাড়ি চলতে পারবেনা। প্রায় ঘাটে যানজট তৈরি হবে। যাতায়াত ব্যবস্থায় ব্যত্যয় ঘটবে। স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে মোজাম্মেল ও ইব্রাহিম বলেন, এটি আমাদের নিজস্ব সম্পত্তি। এখানে আমরা যা মন চায় করতে পারি। শুনলাম যেখানে স্থাপনা তৈরি করছেন সে জায়গা সরকারি। আপনাদের হলে কাগজপত্রতো আছে, একটু দেখাতেন। এসময় তারা উত্তেজিত হয়ে বলেন, কোনো কাগজপত্র নেই। এখানে জোর করে স্থাপনা বানাবো। পারলে কেউ কিছু করুক। সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেজবাউল সাবেরিন বলেন, শনিবার তফসিলদারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। কাগজপত্র দেখতে চাইলে তাৎক্ষণিক কিছু দেখাতে পারেনি। কাগজপত্রসহ ভূমি অফিসে আসতে বলা হয়েছিল। তারা কেউ আসেনি। এ বিষয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। পরে ঘটনাস্থলে লোকজন পাঠিয়ে কাজ বন্ধ রেখেছি। ওই স্থানটি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার চর-কিশোরগঞ্জ এলাকার মধ্যে পড়েছে। আমরা সোনারগাঁও উপজেলার সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করেছি। ইউএনওর সাথেও কথা বলবো। কাগজপত্র না থাকলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা করে দখলমুক্ত করা হবে।
গজারিয়া ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক দখল করে স্থাপনা নির্মাণ
আগের পোস্ট