নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর সড়কে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনা যাচ্ছে না। ফলে যাত্রীদের মিলছে না ভোগান্তি থেকে রেহাই। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কারের কথা বললেও পরিবহন খাতে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার চোখে পড়েনি। বরং বলা যায়, পরিবহন খাতে সংস্কারের ছিটেফোঁটা নেই, উল্টো পথেই রয়েছে সড়কের শৃঙ্খলা। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ঠিকমতো কাজ করতে পারেনি। বিআরটিএ সমাধান করতে পারেনি সড়কে বিদ্যমান সমস্যাগুলো। বিআরটিএ এবং পরিবহন খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মাধ্যমে রাজধানীতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ই-টিকেটিং পদ্ধতি ও কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু করা হয়। গাজীপুর থেকে ঢাকা সড়কের বিভিন্ন রুটে নতুন পদ্ধতিতে প্রথম অবস্থায় ২১টি কোম্পানির ২৬১০টি বাস চালু করা হয়। সব গাড়ির রঙ গোলাপি নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যেই নতুন এ ব্যবস্থার গাড়ির শ্রমিকদের ভেতর অসন্তোষ শুরু হয়। ফলে সমিতির নতুন উদ্যোগ কাজে আসেনি। তাছাড়া বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় গত ফেব্রুয়ারিতে গাবতলী-চাষাঢ়া রুটে বোরাক পরিবহনের ৩৫টি এসি বাস দিয়ে যাত্রা করেছে গ্রিন ক্লাস্টার। কিন্তু বাসের সংখ্যা কম হওয়ায় বেশিরভাগ সময় ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের বেশি অপেক্ষায় থাকতে হয়। অন্য রুটগুলো চালু না করায় কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, সড়কে রঙ করা লক্কড় ঝক্কড় বাস চলাচল করছে আর ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এখনো ২০ বছরের বেশি পুরনো বাস সড়কে চলাচল করছে। শ্রমিকদের এখনো নিয়োগপত্র দেয়া হয় না। ই-টিকেটিং ব্যবস্থা চালু হলেও তা এখন বিদ্যমান নেই। ওসব সমস্যার যদি সমাধান না হয়, তাহলে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।
এদিকে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর কবিরের মতে, দীর্ঘ ১৫ বছর বিগত সরকারের লোকজন সড়কের দায়িত্বে ছিল। তাদের জন্য সড়কে শৃঙ্খলা আনা যাচ্ছে না। সমিতির নানা উদ্যোগ তারা নষ্ট করে দেয়। মালিক সমিতি পরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে চায়।
অন্যদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন র্কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন জানান, বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটি (ডিটিসিএ) সমপ্রতি গ্রিন ক্লাস্টার চালু করেছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সঙ্গে একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ চলছে। ৪০০টি নতুন বাস নামানোর জন্য এ প্রকল্প। বিআরটিএ গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে চাচ্ছে। আগামী মে মাস থেকে সড়কে ২০ বছরের পুরনো বাস আর চলাচল করতে পারবে না। বিআরটিএ বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করবে।