নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালির মন-মননে চিন্তা-চেতনে আদর্শ-অনুপ্রেরণে চেতনা ও জাগরণের অমর মন্ত্র। সঙ্কটে-সংগ্রামে ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার অবিনাশী অনুপ্রেরণার দিকদর্শন।
গতকাল সোমবার মুন্সীগঞ্জ শহরে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সবায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। জেলা কৃষকলীগের সভাপতি মহাসীন মাখনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. গোলাম মাওলা তপন, মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক মোর্শেদা আক্তার লিপি, কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, জেলা পরিষদ সদস্য আরিফুর রহমান, গোলাম রসুল সিরাজী রোমান, কাউন্সিলর নার্গিস আক্তার, শিল্পাঞ্চল আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতি আবুল কাশেম, যুবলীগ নেতা জাহিদ হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম পলাশ প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বিশে^র মুক্তিকামী মানুষের চিরঞ্জীব অনুপ্রেরণার এক মহাকাব্য। সেদিনের সেই মহাকাব্যিক উচ্চারণ গোটা বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহিত করেছিল। একটি ভাষণ বিশে^র ভূগোল, ইতিহাস ও মানচিত্র বদলে দিয়েছিলÑ একটি জাতিকে এনে দিয়েছে স্বাধীনতা। এই ভাষণ সময়ের পরিসীমায় গন্ডিবদ্ধ না থেকে তা হয়ে উঠেছে কালোত্তীর্ণ ও প্রেরণাদায়ী; যার প্রতিটি বাক্য আজও সমানভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, সমানভাবে আবেদনময়ী। কালজয়ী এই ভাষণ ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া ফিনিক্স পাখির মত বিশ্বের যেকোন নিপীড়িত জাতির দুর্দিনে, দুর্বিপাকে আজও আলোকবর্তিকা হয়ে পথ দেখায়। এই ভাষণের সার্বজনীনতা, মানবিকতা চির প্রবাহমান। যেকোনো নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য এই ভাষণ সবসময়ই আবেদন সৃষ্টিকারী। এই ভাষণে গণতন্ত্র, আত্মনিয়ন্ত্রণ, স্বাধিকার, মানবতা এবং সব মানুষের কথা বলা হয়েছে। ফলে এই ভাষণ দেশ-কালের গন্ডি ছাড়িয়ে সার্বজনীন হয়েছে।
তিনি বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণ বিশে^র নির্যাতিত, নিপিড়ীত, বঞ্চিত, দিকহারা, শোষিত মানুষের লড়াই-সংগ্রামের অনুপ্রেরণা ও জাগরণের অমর স্লোগান এবং ক্রান্তিকালের দিকনির্দেশনা হিসেবে সবসময় সমানভাবে আলো ছড়াচ্ছে। ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও সময়োপযোগিতার কারণে ভাষণটি আজও সারাবিশ্বে অতীব তাৎপর্যপূর্ণ একটি ঐতিহাসিক প্রামাণিক দলিল হিসেবে পরিগণিত এবং বিশ্বে সর্বাধিকবার প্রচারিত ও শ্রবণকৃত ভাষণ। যার পরিপ্রেক্ষিতে ভাষণটিকে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে (এমওডব্লিউ) অর্ন্তভুক্ত করে “ডকুমেন্টারী হেরিটেজ” বা বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দেয়া গোটা বিশ্বে প্রায় সাড়ে চারশোর মতো প্রামাণিক দলিলের মধ্যে অলিখিত ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে একমাত্র বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি। বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণটি বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে এবং বাঙালি জাতির অনুপ্রেরণার অনির্বাণ শিখা হয়ে অফুরন্ত শক্তি ও সাহস যুগিয়ে আসছে।