নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল বাংলায় জঙ্গীবাদ ও উগ্র-সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবাদের কোনো ঠাঁই নেই। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্টের সিরিজ বোমা হামলাকারী ও তাদের মদদ দাতাদের বিরুদ্ধে সকলকে কঠোর সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
গতকাল সোমবার ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে রামপাল ইউনিয়নের হাতিমারা এলাকায় শেখ আমানুল্লাহ স্মৃতি সংসদ প্রাঙ্গণে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ মনিরুজ্জামান রিপন, জেলা পরিষদ সদস্য আরিফুর রহমান, গোলাম রসুল সিরাজী রোমান, পৌরসভার কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম পলাশ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক আপন দাস প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১-এ পাকিস্তানি শাসক ও তাদের এদেশীয় দোসর উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীকে পরাজিত করে ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অসাম্প্রদায়িক জাতি-রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম হয়। জন্মলগ্নেই বাংলাদেশকে ধর্ম নিরপেক্ষ গণপ্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হলেও পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে কখনো মেনে নিতে পারেনি।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে পাকিস্তানি ভাবাদর্শের অনুসারী খুনিচক্র। বাংলাদেশে উল্টোরথের যাত্রা শুরু হয়। বাংলাদেশ বেতার পাকিস্তানের আদলে হয়ে যায় রেডিও বাংলাদেশÑ ‘জয় বাংলা’র পরিবর্তে জিন্দাবাদ। এসময় সংবিধানের ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মৌল চরিত্র-বৈশিষ্ট্য পাল্টে দেয় খুনিচক্র। খুনি মোস্তাক-জিয়া ও পরবর্তীতে খালেদা-তারেকের আশ্রয়-প্রশয়ে লালিত হয় উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামাত জোট শাসনামলে ২০০২ জঙ্গী সংগঠন জেএমবি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। জেএমবি ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত দেশে ২৬টি হামলা চালায়। এসময় হুজিও বেশ কয়েকটি নাশকতামূলক হামলা চালায়। জঙ্গি নেতা শায়েখ আব্দুর রব এবং সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাইয়ের উত্থান ঘটে। তখন বিএনপি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় বাংলা হচ্ছে মিডিয়ার সৃষ্টি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় ৫০০টি স্থানে একযোগে বোমা হামলা। ময়মনসিংহে ফাইলা পাগলার মাজার ও ময়মনসিংহের তিনটি সিনেমা হলে বোমা হামলা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নেত্রকোণা, দিনাজপুর, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন স্থানে ১৭ আগস্টের পর তাদের চালানো একের পর এক আত্মঘাতী হামলায় বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ, সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তাসহ ৩৩ জন মারা যান, আহত হন ৪ শতাধিক। ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যা করে। এক কথায় বিএনপি-জামাত জোটের ওই আমলে জঙ্গিবাদের ভয়াবহ উত্থানে বাংলাদেশে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাংলার মানুষ আর সেই পরিস্থিতি ফিরে আসতে দেবে না। খালেদা-তারেকের হাতে বাংলাদেশ অনিরাপদ তা বাংলার মানুষ ভালো করেই জানে ও বোঝে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলায় জঙ্গীবাদের ঠাঁই হবে না – অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি
আগের পোস্ট