নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার প্রধান ফসল আলু আর তাই আলুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাজারো কৃষক।
এ বছর টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় ৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে। শীতে এবার আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
সরেজমিনে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, আলু ক্ষেতে কাজ করছেন চাষিরা। কেউ আলু জমিতে পানি সেচ দিচ্ছেন, কেউ আলু গাছের সাথে হওয়া বথুয়া (আগাছা) তুলে ফেলছেন, কেউ আলু গাছের সারিতে মাটি তুলে দেয়া ও সরিয়ে দেয়ার কাজ করছেন। আবার কেউ দিচ্ছেন রাসায়নিক সার। কেউবা ছত্রাক, রোগ-বালাই ও ঘন কুয়াশার হাত থেকে ফসল বাঁচাতে করছেন কীটনাশক স্প্রে।
উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়নের কুরমিড়া গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী শেখ এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এ বছর আলু রোপণ করার পরে শীত কম পড়ায় ও কুয়াশা থাকায় আলুর ফলন ভালো হবে কি না তা নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবত প্রচন্ড শীত পড়ায় আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে আমি আশা করছি।
উপজেলার আলুর জমিগুলোতে অগ্রহায়ণ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আলু বীজ রোপণ করেন কৃষকেরা। এ আলু তোলা হবে ফাল্গুন মাসের শেষের দিকে।
টঙ্গীবাড়ী কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ মৌসুমে আলুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল দশ হাজার ১০ হেক্টর। কিন্তু এ বছর নয় হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আলুচাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সামান্য কিছু কম।
উপজেলার চর ছটফটিয়া গ্রামের কৃষক মোঃ মমিন শেখ বলেন, গতবছর আলু চাষ করে তেমন বেশি লাভবান হতে পারিনি। কারণ আলু বীজের দাম বেশী দিয়ে কিনেছিলাম, রসায়নিক সার কিনতে হয়েছে। আবার আলুর জমিতে ১ জন লোক দিয়ে কাজ করাতে দৈনিক ৫০০ টাকা দিতে হয়, আবার আলু বীজ সংরক্ষণ করার জন্য কোল্ড স্টোরেজে মোটা টাকা দিতে হয়।
তিনি আরও বলেন, এবছর আমি মোট ৬৪৮ শতাংশ জমিতে আলু চাষ করেছি। আর এ ব্যাপারে আমাকে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস নানা ধরনের সহযোগিতা করে আসছে।
বালাইনাশক ও আলু চাষের সঠিক পরিচর্যা পদ্ধতি সম্বন্ধে পরামর্শ দিয়েছে। আমি আশা করছি এবার আমি উপজেলা কৃষি অফিস এর পরামর্শ নিয়ে সঠিকভাবে আলু চাষ করেছি তাই অনেকটাই লাভবান হওয়ার আশা করছি।
টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কৃষি অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এর সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ১০ হেক্টর জমি। কিন্তু চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন চাষিরা আলু চাষ করে লাভবান না হওয়াতে অন্য ফসল ফলাচ্ছেন। যেমন- সরিষা, ভুট্টা, ও অন্যান্য ফসল। আবার ফসলি জমি ভরাট করার কারণেও আলু চাষ কমে এসেছে। তিনি আরও বলেন, আমি এবং আমার অফিসের ফিল্ড অফিসার কৃষক পর্যায়ে আলু চাষের সঠিক পদ্ধতি সম্বন্ধে কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি ও নিয়মিত আলু ক্ষেত পরিদর্শন করে সঠিক পরামর্শ দিয়ে আসছি।
টঙ্গীবাড়ীতে আলুর পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক
আগের পোস্ট