সামসুদ্দিন তুহিন : মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও আমজাদ আলী কলেজের জমি আত্মসাতের পায়তারাকারী জাঈদ বিন কালামের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে উক্ত কলেজ ও বালিগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের জনগণ।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার বালিগাঁও বাজার সংলগ্ন কলেজের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই কলেজ ও বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। কলেজটি বাজার সংলগ্ন হওয়ায় বহিরাগত অনেক মানুষের যাওয়া-আসা থাকে। তাই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য একটি গেইট নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ঠিক তখন একটি কুচক্রী মহল গেইট নির্মাণ কাজে বাধা দেয় এবং একটি মিথ্যা মামলা দেয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং এই দুষ্কৃতিকারী ভূমিদস্যুর বিচার চাই।
তারা প্রেস রিলিজের মাধ্যমে আরও জানান, ২০০৩ সালে অত্র কলেজটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ২৯৩ দাগের জমি ভোগ দখল করে আসছে। ৩২ শতক জমি হতে কলেজকে আমজাদ আলীর তিন ছেলে আবুল কালাম মিয়া, মোঃ আবুল বাশার মিয়া ও মোঃ আবুল খায়ের মিয়া কর্তৃক ৩.২৩ শতক জমি দান করেন। উক্ত জায়গার মধ্যে কলেজের মূল ফটক নির্মিত হচ্ছে। বাদী জাইদ বিন কালাম যে পিটিশন দায়ের করেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে কলেজের ফটক নির্মাণ কাজে বাধাগ্রস্থ করেছে।
উল্লেখ্য যে, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন ২০০১ এর ধারা ৯ অনুযায়ী ২৯৩ দাগের ৩২ শতক জমি কলেজের ভোগ দখলে আছে। যা জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত অর্থায়নে প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত এবং নির্মাণাধীন গেইটটি কলেজের নিজস্ব জায়গায় নির্মিত হচ্ছে।
এমতাবস্থায় অভিযোগকারী জাঈদ বিন কালাম এর দাবি অযৌক্তিক ভিত্তিহীন এবং ষড়যন্ত্রমূলক, যাহা কলেজের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম এবং উন্নয়নমূলক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
কলেজের অধ্যক্ষ এস এম আনিছুল হক বলেন, আমরা কলেজের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কলেজের ফটক নির্মাণ শুরু করি। কিন্তু জাইদ বিন কালাম নামের এক ব্যক্তি এই মহৎ কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অথচ এই জায়গা তার বাবা-চাচারা কলেজে দান করেছেন। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড আর সেই মেরুদন্ডে জাইদ বিন কালাম আঘাত করেছে। আমরা চাই, দ্রুত তাকে আইনের আওতায় এনে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী জাকিয়া বলেন, প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে কলেজের জমি আত্মসাতকারীর শাস্তির দাবিতে আজকের এই মানববন্ধন। বালিগাঁও আমজাদ আলী কলেজ শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি আমাদের স্বপ্নের ঠিকানা। কুচক্রকারী, দুষ্কৃতিকারী ও ভূমিদস্যু জাঈদ বিন কালাম আমাদের এই উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু মনে রাখুন, যারা শিক্ষার গেইট আটকে রাখতে চায় তারা নিজের ভবিষ্যৎ বন্ধ করে দেয়। আমাদের দাবি একটাই, আমাদের গেইট চাই, আমাদের সম্মান চাই। আমাদের এই গেইট নির্মাণের বিরুদ্ধে দুষ্কৃতিকারী জাঈদ বিন কালামের শাস্তি চাই।
কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীসহ পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধনে অংশ নেয়।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আমি এ বিষয়ে অবগত আছি। উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে বাদীকে বুঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বাদী গেইট নির্মাণে নারাজ।