নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দরপত্র ছাড়াই ভেঙে ফেলা হয়েছে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের একটি পুরাতন ভবন। এই ভবনটিতে কলেরা ও যক্ষা রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম চলতো। ভবনটি ভাঙার পর হাসপাতালের একটি চক্র ভাঙা ভবনের মালামাল বিক্রি করে ফেলে গোপনে। ভ্যানগাড়িতে করে ভবন ভাঙার মালামাল নিয়ে যাওয়ার পথে মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জন সেই মালামালের কিছু অংশ উদ্ধার করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, যে জায়গায় ভবন ভাঙা হয়েছে সেখানে অক্সিজেন ও মালামাল রাখার কক্ষ বানানো হবে। ভবন ভাঙার অনুমতি ও দরপত্র কোনটিই নেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা এক পরিচালক বলেছেন, দরপত্র নেই, তবে সিভিল সার্জনের অনুমতি নিয়েছেন তারা। এ ঘটনার পর পুরাতন ভবনের ভাঙা কিছু স্থাপনা দাঁড়িয়ে আছে। ভেঙে ফেলা বাকি অংশে অক্সিজেন ও মালামাল রাখার জন্য নতুন ভবনের কাজ চলছে। হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মোঃ খলিল তাদেরকে ভবন ভাঙার কাজ দিয়েছেন। এর বেশি কিছু তারা জানেন না বলে জানান। স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, পুরাতন এ ভবনটিতে একসময় কলেরা ও যক্ষা রোগীদের কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। বেশ কিছুদিন যাবত ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিলো। একটি চক্র ভবনটির ভাঙা ইট-সুরকি অন্যান্য মালামাল লুকিয়ে তারা অন্যত্র বিক্রি করতে থাকে। তবে সরকারি একটি ভবন কোনরকম দরপত্র ছাড়াই কিভাবে ভাঙা যায়, ভাঙা মালামাল কিভাবে বিক্রি হচ্ছে, টাকা কোথায় যাচ্ছে- এমন প্রশ্ন সবার মনে। পুরাতন ভবন ভাঙার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালের এ অংশে ইউনিসেফের অর্থায়নে ইন্সিপেক্টা নামে একটি প্রতিষ্ঠান অক্সিজেন ও মেশিনারি রাখার জন্য ভবন করবে। হাসপাতালের কোথাও কোনো জায়গা নেই। তাই এই ভবনটি ভেঙে এখানে কাজ করা হচ্ছে। ভবন ভাঙার বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইন্সিপেক্টার নতুন ভবন নির্মাণের পরিচালক আজাহার উদ্দিন বলেন, ভবন ভাঙার আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। অনুমতি না নিলে আমরা কাজ করতে পারতাম না। আমাদের কাছে অনুমতির প্রমাণ আছে। তবে কোন দরপত্র করা হয়নি। মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জন আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভবন ভাঙার বিষয়ে আমার কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। এমনকি দরপত্র করা হয়নি। আমাকে না জানিয়েই ভবনের ভাঙার কাজ শুরু করা হয়। আমি জানার পর সরকারের নিয়ম-নীতি মেনে ভবন ভাঙতে বলেছি। ভাঙা মালামাল বিক্রি করতে নিষেধ করেছি। এই বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ সব বলতে পারবে। টেন্ডার হয়েছে কি হয়নি সেটাও গণপূর্ত বিভাগের কাজ। মুন্সীগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ আহসান বলেন, ভবন ভাঙা ও টেন্ডারের বিষয়ে সিভিল সার্জন বলতে পারবেন। আমরা কেবল সরকারের হয়ে কাজ করি এবং তদারকি করি।