নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প। কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা সেতু, মেরিন ড্রাইভ, ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পের কাজ যখন শেষের দিকে, দেশের মানুষের চোখ তখন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণের দিকে। ২০২১ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ তা পিছিয়ে ২০২২ সালে শেষ করার ঘোষণা দেন। কিন্তু দেশের মানুষের বহুদিনের সেই রেলে কক্সবাজার ভ্রমণের স্বপ্ন কি নতুন বছরে পূরণ হবে, সেই প্রশ্ন সবার মনে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, রেললাইন নির্মাণ হলে ট্রেনে পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজারে প্রবেশ করতে পারবেন পর্যটকেরা। চট্টগ্রাম থেকে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে। এজন্য বিশেষ কোচ কেনা হবে। পর্যটন নগরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে সমুদ্রসৈকত থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ‘ঝিনুকাকৃতির’ রেলস্টেশন। এটি দেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশন হতে যাচ্ছে। রেলপথটিতে ৮টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথমে কক্সবাজার ও পরের স্টেশনটি রামু। এরপর ইসলামাবাদ, ডুলাহাজারা, চকরিয়া, হারবাং, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ কাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় ১২৮ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার, রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হচ্ছে। এছাড়া নির্মিত হচ্ছে চারটি বড় সেতুসহ ২৫টি সেতু। বড় সেতুগুলো হচ্ছে মাতামুহুরী নদী, মাতামুহুরী শাখা নদী, শঙ্খ ও বাঁকখালী নদীর ওপর। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুইভাগে কাজটি করছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ হয়েছে ৬৬ শতাংশ। রেল কর্মকর্তারা বলছেন, বর্ষা আর অধিগ্রহণ ঝামেলার কারণে কিছুটা কাজের বিঘ্ন ঘটে। এখন কাজ পুরোদমে চলছে। ২০২৩ সালের জুনে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে নতুন এই রেলপথ। প্রকল্প নেওয়ার সময় ২০১৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। তা বাড়িয়ে করা হয় ২০১৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় ২০১৭ সালে। তখন প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা ঠিক করা হয় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু এ বছর প্রকল্পের কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয় রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।