নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের আদারিয়াতলার ডিঙ্গাভাঙ্গার নয়া হাজী বাড়ীর আবুল হোসেনের ছেলে সৌদি প্রবাসী আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে জমি এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। সৌদিআরবে নেয়ার কথা বলে নিজ গ্রামের বাইরের এলাকা থেকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আক্তার হোসেন বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া অনেককে ভুলভাল বুঝিয়ে তাদের কাছ থেকে জমি হাতিয়ে নেয়ার আরো অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। হাতিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধারের লক্ষ্যে ভুক্তভোগীরা আক্তারের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে আক্তার হোসেন সৌদিআরবে অবস্থান করার সুবাদে এলাকায় তার নিজ বাড়ির দোতলা পাকা বিল্ডিংটি এখন একেক সময়ে একেকজন দাবি করে এর দখল নিতে চাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। আর এ বিষয়কে কেন্দ্র করে এখানে প্রতিরোধের ব্যবস্থাও গড়ে উঠেছে বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেছেন। তবে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে এখানে যেকোন সময়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে প্রথম দফায় এখানে হারুন নামের এক ব্যক্তি এ বিল্ডিংয়ের দখল নেয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু স্থানীয় প্রতিরোধের মুখে সে আর এ কাজে সফল হতে পারেনি। দখলের চেষ্টার সময়ে হারুন দাবি করেন যে, আক্তার তাকে পাওয়ার নামা দিয়েছে। এ কারণে সে এখানে এসেছেন। আক্তার থাকে সৌদিআরবে। সে কিভাবে হারুনকে পাওয়ার নামা দিলো তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার কিছুদির পরে মুন্সীগঞ্জ শহর থেকে আরো একজন এ বিল্ডিংয়ের দখল নেয়ার চেষ্টা চালায় পূর্বের অনুসারে। সেও প্রতিরোধের মুখে ফিরে আসেন বলে শোনা যাচ্ছে। তিনিও দাবি করেন যে, আক্তারের কাছ থেকে পাওয়ার নামার বলে সে এখানে এসেছেন। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, হারুনের পরামর্শেই তিনি এখানে এসেছিলেন। প্রথম দফায় হারুন এ কাজে বিফল হওয়ায় ঐ ব্যক্তির দ্বারস্থ হয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, করোনার আগে বিভিন্ন সময় একাধিকবার আক্তার দেশে আসতেন ও সৌদিতে যেতেন। সেই সুবাদে তার নিকট আত্মীয় ও এলাকাবাসীদের মাঝে ভাল ভিসা ও বিদেশে নেওয়ার কথা বলেন আক্তার। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাদিসহ আকর্ষণীয় বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে তার বাড়ির মানুষসহ নিকট আত্মীয় ও এলাকাবাসীদের কাছ থেকে দফায় দফায় বিপুল পরিমাণ টাকা নেন। এমনকি তাদের কাছ থেকে কৌশলে স্বর্ণালংকার ও জমি আত্মসাতেরও খবর পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিজের বাড়ীর লোকজনসহ এলাকার অসংখ্য মানুষ আক্তার হোসেনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এখানকার সাবেক মহিলা মেম্বার সেলিনা বেগম এর কাছ থেকে সাড়ে ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এদিকে স্থানীয়ভাবে যাদের কাছ থেকে আক্তার বিদেশে নেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা হলেন ফয়সাল শেখের কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা, আলো বেগমের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা, ইমরান হোসেনের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা, হৃদয় মিয়ার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা, সোহেল শেখের কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা, ইকবাল হোসেনের কাছ থেকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা, হেলেনা বেগমের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, আওলাদ হোসেনের কাছ থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার, নাজির হোসেনর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, ফরিদা বেগমের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা। ফরিদার কাছ থেকে সোয়া ৩ শতাংশ জমি নিয়ে তা আক্তার আত্মসাৎ করেছেন। এদিকে একই এলাকার আমির হোসেনের কাছ থেকে তার ছোট ভাই আনোয়ারকে সৌদি নেয়ার কথা বলে ৭ লাখ টাকা নিয়েছেন আক্তার। চৌধুরী বাড়ির শুভ’র কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নেয়া হয়েছে বিদেশে নেয়ার কথা বলে।