মুন্সীগঞ্জে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৯টা। সদর উপজেলার আদরিয়াতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঢুং ঢাং শব্দে বেজে উঠলো কাক্সিক্ষত ঘণ্টা। আর এর মধ্য দিয়েই দীর্ঘ ১৭ মাস পর শুরু হলো স্কুলের ক্লাস। স্কুলে প্রবেশ করেই আনন্দ-উচ্ছ্বাসে আত্মহারা হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এ স্কুলের মত মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার স্কুল মুখরিত হয়ে ওঠে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পদচারণায়। এদিকে, গেট থেকে নেমেই সদর উপজেলার অনেক স্কুলগুলোতে তাপমাত্রা মেপে এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার মাখিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশ করানো হয়। এছাড়া মাস্ক পরা ছিল বাধ্যতামূলক। তবে, কেউ মাস্ক না আনলে স্কুলের পক্ষ থেকে তাদের মাস্ক দেয়া হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ফুলের স্টিক দিয়ে বরণ করা হয়। আদরিয়াতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করতে দেখা গেছে। অপরদিকে, পঞ্চসার ইউনিয়নের মালিরপাথর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বরণ করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিটি শ্রেণীকক্ষ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনা সাজানো হয় বিভিন্ন রঙের বেলুন দিয়ে। স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. বাদশা মিয়া বলেন, আজ অনেকটা আনন্দে আপ্লুত শিক্ষার্থীরা। যে কারণে অনেকেই আগেভাগে চলে আসে স্কুলে। সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুল খোলার প্রথম দিনে দু’টি ক্লাসের উপস্থিতি ছিলো ভালো। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, দপ্তরীসহ সকলেই উপস্থিতি ছিলেন। মালিরপাথর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেন, স্কুলের সকল শিক্ষিকা একত্রিত হয়ে ১১ তারিখ স্কুল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত ছিলাম। স্কুল খোলার শুরুতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মাস্ক পরিধান করানো হয়েছে। স্কুলে আসা শিক্ষার্থীরা বলেন, স্কুল ১০টায় শুরু হলেও অনেকদিন পর স্কুল খোলায় ৭টার সময় চলে এসেছি। স্কুল খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে। দেখে ভীষণ ভালো লাগছে। অনেকদিন পর সহপাঠীদের সাথে দেখা হয়েছে। করোনার কারণে ঘরবন্দি থাকতে থাকতে অস্থির হয়ে উঠেছিলাম। এখন স্কুল খুলেছে আবার আগের মতো আমরা স্কুলে এসে ক্লাস করতে পারবো। এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে। ফুলকুঁড়ি কিন্ডারগার্টেন এর ছাত্র সায়মান রাফির মা বলেন, এতোদিন বন্দি জীবনে ছিল আমার ছেলে। এতে সে অনেক মানসিক চাপে থাকতো। এখন ক্লাসে এসে সহপাঠীদের সাথে দেখা হওয়ায় স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে। এতে স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারছি আমরা। সদর উপজেলার আদরিয়াতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সামিতা ইয়াসমিন বলেন, গেট থেকেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার মাখিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশ করানো হয়েছে। এছাড়া মাস্ক পরা ছিল বাধ্যতামূলক। তবে, কেউ মাস্ক না আনলে স্কুলের পক্ষ থেকে তাদের মাস্ক দেয়া হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ফুলের স্টিক দিয়ে বরণ করা হয়। করোনার কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি শেষে গতকাল রবিবার থেকে চালু হয়েছে সশরীরে ক্লাস। এতে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা অনেক খুশি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর স্কুল খোলায় শিক্ষার্থীদের সাথে সাথে আমরাও অনেক আনন্দিত। অভিভাবক মাসুদ বলেন, দীর্ঘদিন পর ঘণ্টাধ্বনির শব্দ পেল শিক্ষার্থীরা। তাদের পদচারণায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। মুন্সীগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ইউনুস ফারুকী বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে জেলার সকল সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা খুলেছে।