নিজস্ব প্রতিবেদক
কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে নানা আয়োজনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও এর অধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডাইফ) দেশের বিভিন্ন স্থানে র্যালি, আলোচনা অনুষ্ঠান, জাতীয় দৈনিকসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ, স্মরণিকা প্রকাশ, টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠান, মোবাইলে খুদে বার্তা প্রেরণ, রেডিও প্রোগ্রাম, ট্রাক শো-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করেছে।
শ্রমঘন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত ডাইফ-এর উপ-মহাপরিদর্শকের কার্যালয়সমূহে জেলা প্রশাসন, কারখানা মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ে গণসচেতনতামূলক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছে। এ উপলক্ষ্যে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শ্রমিক, মালিক, সরকার ও আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি বলেন, “শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণকে কেবল মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ নেই। এটি এখন কারখানা মালিকপক্ষের জন্য দায়বদ্ধতায় পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ যেভাবে উন্নত বিশ্বের অভিমুখে যাত্রা করেছে সেখানে পেশাগত সুরক্ষার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা পালনকে জাতীয় সংস্কৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। শ্রমসংক্রান্ত কোন অভিযোগ থাকলে আমাদেরকে জানান। আমরা আপনাদের জন্য কাজ করছি। বিশ্ব দরবারে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি বজায় রাখতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিযোগ না করার জন্য আমি আহ্বান জানাই।”
সভাপতির বক্তব্যে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ এহছানে এলাহী বলেন, “শ্রমিক, মালিক ও সরকার মিলে আমরা শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে ইতোমধ্যে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে আমরা উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবো।”
বাংলাদেশে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ে আন্তরিক অবদান রাখায় আইএলও, কানাডা, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, জার্মানীসহ উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র ও সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শ্রম সচিব।
স্বাগত বক্তব্যে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “কারখানার সংস্কার কাজ তদারকি ও ত্বরান্বিতকরণে স্ট্রাকচারাল, ফায়ার ও ইলেক্ট্রিক্যাল সেইফটি বিষয়ে দক্ষ পরিদর্শকদের সমন্বয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেইফটি ইউনিট গঠন করা হয়েছে। কারখানার সেইফটি নিশ্চিতকরণে ৬৫৯২টি সেইফটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্র নিশ্চিতকরণে ৬৪৯৭টি কারখানায় শিশুকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।”
আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর তোমো পুটিআইনেন বলেন, “পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সকলের সামাজিক ন্যায়বিচার অর্জনের জন্য একটি মৌলিক পদক্ষেপ। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যকে মৌলিক অধিকার হিসাবে উন্নীত করার জন্য সরকার, শ্রমিক এবং মালিকপক্ষের সাথে আইএলও কাজ চালিয়ে যাবে।”
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসি, কানাডিয়ান হাইকমিশনের হেড অব কো-অপারেশন জো গুডিংস, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাশীর কবির, বিজিএমইএ-এর পরিচালক মোঃ খসরু চৌধুরী, বিকেএসইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মনসুর আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।