নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলর ধলেশ্বরী নদীর তীর ভাঙ্গতে শুরু করেছে আবার। নদীর পাড় এলাকায় ৩ ফসলী উর্বর জমিগুলো বিলীন হতে চলছে। বাড়ি-ঘর ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে এলাকাবাসী। ভাঙ্গনরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। যতই ঘনিয়ে আসছে বর্ষা ততই বাড়ছে শঙ্কা। ভাঙ্গনের ফলে এ অঞ্চলের কৃষকদের ক্ষতির সম্মুখীন ও সর্বশ্বান্ত হতে হচ্ছে, কৃষিতে ব্যাপক বিপর্যয় ঘটছে। জেলার সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চান্দেরচর গ্রাম ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। বিগত ৩ বছর আগে নদীর সীমানা পিলার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া বিগত ১০ বছরে এই নদীতে বিলীন হয়েছে আরো ১৫ শত ফিট ফসলি জমি। আর মাত্র ২ শত মিটার প্রস্থে ভাঙ্গলে গ্রামের বাড়ি-ঘর, স্কুল, মসজিদ, হাট-বাজার ভাঙ্গনের কবলে পড়বে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নদী ভাঙ্গনের কবলে রয়েছে এ এলাকায় বসবাসরত ১২ হাজার মানুষ। এখানে ১৫টি মসজিদ রয়েছে ১৩টি মসজিদে জুম্মার নামাজ হয়, ২টি মাদরাসা খাসকান্দি দাখিল মদরাসা ও মদিনা পাড়া কওমী মাদরাসা, ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে চান্দের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পূর্ব চান্দের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক ১টি, ৩টি পাকা ব্রীজ, ২টি ঈদগাহ ময়দান এই ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান ও কবরস্থান রয়েছে এখানে, নৌকা ঘাট ৩টি ও ছোট বাজার রয়েছে ৩টি। এখন থেকে ভাঙ্গন রোধ না করলে এসব অঞ্চল বিলীন হতে পারে অচিরেই বলে মনে করেন এলাকাবাসী। ভাঙন কবলিত চান্দের চরের বাসিন্দা সালাহউদ্দিন জানান, আমরা আতঙ্কে আছি যেভাবে জমি ভাঙ্গতে শুরু করেছে বিগত কয়েক বছর যাবত, যদি এ ধারা অব্যাহত থাকে আগামী বছরে আমাদের এই চান্দের চর এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত যে জমি ভেঙ্গেছে সেগুলো থাকলে আমরা ভাল থাকতাম, আমাদের সন্তানেরাও ভাল থাকত। এখানে খুব ভাল ফসল হয়। নদীটা অনেক দূরে ছিল ভাঙতে ভাঙতে বাড়ির সামনে এসেছে। আর কিছুদিন ভাঙলে বাড়িঘর কিছু থাকবে না। গত ৪ মাসে ৩ শ ফুট জায়গা ভেঙে ফসলসহ নদীগর্ভে চলে গেছে। আগে অনেক দূরে ছিল নদী। এখন বাড়ি থেকে না নামতেই নদী পাই। গতবারের আগের বছরই নদীর সীমানা পিলার ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধি কেউ কিছু করছে না। জানা যায়, কুচিয়ামোড়া থেকে বালুচর পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষের বসবাস। এদের বেশিরভাগ কৃষক। কৃষিকাজ তাদের একমাত্র অবলম্বন। কৃষির উপর নির্ভর করে এ মানুষগুলো চলে। নদীতে জমিগুলো চলে গেলে তারা নিঃস্ব হয়ে যাবে। তাই ভাঙ্গনরোধে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী বলে জানান চান্দের চর গ্রামের আব্দুল হামিদ।
সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ধলেশ^রী নদীতীর ধীর গতিতে ভাঙছে আমি সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করেছি। এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও বিষয়টা অবগত করেছি। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে লোকজন এসে পরিদর্শন করে গেছে। কোন প্রকার দুর্যোগ হওয়ার আগেই প্রতিরোধের ব্যবস্থা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষরা করবেন।