দেশ থেকে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক নারী পাচার হয়ে যাচ্ছে ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। সংবাদপত্র খুললেই এ ধরনের খবর পাওয়া যায়। বিশেষ করে পাচারকারীরা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মোটা অঙ্কের বেতনের চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে নারীদের পাচার করে।
মানবপাচার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি একটি সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাচার হওয়া অন্তত ৬৪৩ জনকে তারা ভারত থেকে ফিরিয়ে এনেছেন। জানা যায়, দেশের প্রতিটি এলাকায় রয়েছে নারী পাচারকারীদের এজেন্ট। প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে নারী পাচারকারী দলের এজেন্টরা বেশ সক্রিয়। পাচারকারীরা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে বিয়ে, মডেলিং এবং বিদেশে চাকুরিসহ নানা ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করছে। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকা পাচারকারী সিন্ডিকেট নানা কৌশলে লোভ দেখিয়ে ৩০-৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নারীদের বিক্রি করে দিচ্ছে ভারতীয় সিন্ডিকেটের কাছে। সেখানে আবার নানা হাত ঘুরে অনেকেরই ঠিকানা হচ্ছে যৌন পল্লীতে। তারা শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। পুলিশ সদর দপ্তরের সারা দেশের মানবপাচার মামলার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৪ সালের ১৫ জুন থেকে গত বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পাচারের শিকার হয়েছেন ১৩ হাজার ৪২৪ জন। উদ্ধার হয়েছেন ১০ হাজার ৫৭৯ জন। ২ হাজার ৮৪৫ জনের কোনো খোঁজ মেলেনি।
নারী ও শিশু পাচার একটি মারাত্মক অপরাধ। আমাদের দেশে নারী পাচারের অনেক ঘটনাই লোকলজ্জা এবং হয়রানির ভয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আনা হয় না। অনেকে স্বজন হারানোর ব্যথা বুকে পুষে রাখেন কিন্তু এটি বাইরে প্রচার হোক তা চান না। নারী পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। এদের রুখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে। সেই সাথে পাচারকারীদের কবল থেকে নারী পাচার বন্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং এদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
নারী পাচার প্রতিরোধে চাই জনসচেতনতা
আগের পোস্ট