নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গঠনে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বর্জ্যরে পরিমাণ কমাতে, বর্জ্য সংগ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে আধুনিক ল্যান্ডফিল পরিচালনা চালু করতে উন্নত বর্জ্য শ্রেণিবিন্যাস, পুনর্ব্যবহার ও পুনরুদ্ধার ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর দেন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে তার দপ্তরে দক্ষিণ কোরিয়ার সুদোকওয়ান ল্যান্ডফিল ম্যানেজমেন্ট করপোরেশনের (এসএলসি) একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং আধুনিক স্যানিটারি ল্যান্ডফিল স্থাপনের মাধ্যমে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসে কারিগরি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়।
কোরিয়ান প্রতিনিধিদল দুটি বিদ্যমান ডাম্পসাইট বন্ধ ও পুনর্বাসন এবং কোরিয়ার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় একটি নতুন স্যানিটারি ল্যান্ডফিল নির্মাণের একটি সমন্বিত পরিকল্পনা উপস্থাপন করে। এই প্রকল্প কোরিয়ার অনুদান এবং প্রাসঙ্গিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্বল্পসুদে ঋণের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে।
দুটি বিদ্যমান ডাম্পসাইট বন্ধে সময় লাগবে আনুমানিক ১ থেকে দেড় বছর এবং পরবর্তী ২০ বছর থাকবে তদারকির জন্য নির্ধারিত। কোরীয় বিশেষজ্ঞরা বলেন, পাঁচ বছর পর জমি স্থিতিশীল হলে পুনর্বাসিত এলাকা জনসাধারণের জন্য সবুজ উন্মুক্ত স্থানে রূপান্তর করা যেতে পারে।
তারা আরও বলেন, নতুন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বর্জ্য সংগ্রাহকদের সম্পৃক্ত করা হলে তাদের কাজের পরিবেশ আরও নিরাপদ হবে এবং পুনর্ব্যবহারের হারও বৃদ্ধি পাবে। বিদ্যমান ডাম্পসাইট বন্ধে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪০ কোটি টাকা এবং নতুন স্যানিটারি ল্যান্ডফিল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে আরও ১৩০০ কোটি টাকা।
কোরীয় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশকে দ্রুত আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্র ও প্রকল্প সংক্রান্ত নথিপত্র সম্পন্ন করার আহ্বান জানায়, যাতে প্রস্তাবিত অর্থায়ন কার্যকর করা যায়। তারা বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ও দক্ষ স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ‘সুদোকওয়ান’-এর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশে SLC-এর প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের একটি নতুন উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব দেয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. রেজাউল করিম, এসএলসি-এর পরিচালক সিওক ওউ জুংসহ উভয় দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
বৈঠক শেষে উভয়পক্ষ বাংলাদেশের জন্য একটি পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ সহযোগিতা আরও জোরদারে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।