নিজস্ব প্রতিবেদক
পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে রাস্তায় ফাটল ধরায় ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী। আর এ বালু উত্তোলন ব্যবসার সাথে একটি প্রভাবশালী শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র জড়িত থাকায় এলাকার কেউ তাদের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ভাগ্যকুল ইউনিয়নের মান্দ্রা এলাকায় পদ্মার পাড়ে নদীর পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে বাল্কহেড ব্যবহার করে ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। আর বাল্কহেড থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের সময় নদীতে ড্রেজারের পাইপ ব্যবহার করে পানির সাহায্যে বালু আনলোড করা হচ্ছে। এসময় নদীর পাড়ে পানির স্রোত তৈরি হয়। যার ফলে নদীর পাড়ের বালু সরে গিয়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এরইমধ্যে পদ্মা নদী নিকটবর্তী মান্দ্রা পাকা রাস্তার নিচে শুড়ঙ্গ করে ড্রেজারের পাইপ নেওয়ার কারণে এরই মধ্যে ওই রাস্তায় বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে মান্দ্রার পাকা ওই রাস্তাটিও হুমকির মুখে পড়েছে। এভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন চলতে থাকলে মান্দ্রা রাস্তা বড় ধরনের ভাঙ্গনের পাশাপাশি নদী পাড়ে বসবাসরত শত শত ঘরবাড়ি ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় প্রভাবশালী মামুন ও আলী বেপারীসহ বেশ কয়েকজনের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র দীর্ঘ প্রায় ৫/৬ বছর ধরে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। অন্যদিকে ঢাকা-১ আসনের সাংসদ ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমান দোহার উপজেলাকে পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা করতে শত কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সেই প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে দোহার উপজেলায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষেধ। পদ্মা নদীর ভাঙনরোধে পর্যায়ক্রমে শ্রীনগর উপজেলায় পদ্মা নদীর পাড় ঘেঁষে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্পও হাতে নিবেন এমনটাই আশা এলাকাবাসীর। একাধিক স্থানীয় এলাকাবাসী ভয়ে বারবার তাদের নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, রাত-দিন বাল্কহেডের শব্দে আমরা দিশেহারা। তাদের ভয়ে আমরা কেউ কথা বলতে সাহস পাইনা। তারা এতই শক্তিশালী যে, আমরা কেউ তাদের বিষয়ে কথা বলতে সাহস পাইনা। আমাদের জীবনেরও হুমকি রয়েছে। প্রশাসকের অনুমতিপত্র বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা ড্রেজার ব্যবসায়ী মামুন সর্দারের কাছে জানতে চাইলে, তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। রাস্তার ফাটল বিষয়ে তিনি বলেন, রাস্তার তেমন কোন ক্ষতি হবেনা। আমি রাস্তাটি মেরামত করে দিয়েছি। তাছারা আমার ড্রেজারটি ছোট, পাশের ড্রেজারটি বড়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণব ঘোষের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। জেলা বা উপজেলা প্রশাসন থেকে ইজারা না নিয়ে এভাবে বালু উত্তোলন করে জমজমাট ব্যবসা চালানোর কারণে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানায়।
পদ্মায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে রাস্তায় ফাটল ; ভাঙ্গন আতঙ্কে এলাকাবাসী
আগের পোস্ট